বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নেই, তৎপরতাও তেমন নেই। তারপরও ছাত্রলীগের নামে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে যার মতো নগরীর ওয়ার্ড ও কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা দিচ্ছে। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজেই ১১টি কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কমিটি ঘোষণার পর অভিনন্দন ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বিবদমান দুই পক্ষের এক পক্ষে আছেন গত ১৫ মে বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগ কমিটির নেতারা। তারা সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থক। অপরপক্ষে আছেন নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সমর্থক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তারা ২০১২ সাল থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সাবেক মেয়র (প্রয়াত) শওকত হোসেন হিরনের অনুসারী ছিলেন তারা। ২০১৮ সালে সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর হিরন সমর্থক ছাত্রলীগ নেতারা কোণঠাসা হয়ে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হন। আবুল খায়ের মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় নতুন করে উজ্জীবিত তারা।
এর জবাবে আমরাও সকল ওয়ার্ড ও কলেজ শাখায় পাল্টা কমিটি দিয়েছি।’ তুষার স্বীকার করেন, দুই পক্ষের কারও কমিটিরই বৈধতা নেই। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে যে যার মতো ওয়ার্ড ও কলেজ কমিটি ঘোষণা দিচ্ছে। এ নিয়ে অস্থিরতা চলছে।
বিএম কলেজ ছাত্র কর্মপরিষদের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ মুন্না বলেন, সাদিক অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা ভুয়া কমিটি দিচ্ছেন। তারা বলছেন, বিলুপ্ত হওয়ার আগে এসব কমিটি গঠন করেছেন। এখন প্রকাশ করছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি সংগঠনের বিষয় প্যাডে প্রকাশ করেছিলেন সাদেকপন্থিরা। মুন্না বলেন, এ নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখালে এখন ফেসবুকে কমিটি দেওয়া হচ্ছে। বিএম কলেজে এস.আর আকাশকে আহ্বায়ক ও সোহানকে সদস্য সচিব করে কমিটি দিয়েছে সাদেকপন্থিরা। খায়েরপন্থিরা রিফাত ও কামরুলকে যথাক্রমে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করে পাল্টা কমিটি ঘোষণা দেয়। খায়েরপন্থি আরও কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিজ অনুসারীদের নিয়ে পাল্টা কমিটি দেওয়ায় কমিটির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১। ওয়ার্ডগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান মুন্না।
এসব বিষয়ে জানতে বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইছ আহমেদ মান্নাকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি। সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম বলেন, মহানগর কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার আগে তারা নগরের ৩০টি ওয়ার্ড এবং সব কলেজ ইউনিট কমিটি গঠন সম্পন্ন করেছিলেন। ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি প্রকাশ করা হয়। এরপর সিটি নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় বিরোধে বাকি কমিটিগুলো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। মাইনুল দাবি করেন, প্রকাশ না করা কমিটিগুলো তারা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে একটি পক্ষ পাল্টা কমিটি ঘোষণার নামে ছাত্রলীগ নিয়ে তামাশা করছে।