আহত ছাত্রদল নেতাদের নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। ছবি সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় মোবাইলফোন চুরির অভিযোগে মারপিটে ছাত্রদলের চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে বিষয়টিকে ছাত্রলীগের পরিকল্পিত হামলা বলে অভিযোগ করেন পিটুনির শিকার নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাতে শহরের কলেজ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল বারী রাজিবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত অপর তিন জনের মধ্যে রয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল বারী রাজীবের ভাই মো. কাজল, মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি মো. অনিক ও ছাত্রদলের কর্মী মো. সোহাগ হোসেন।
আহত ছাত্রদল নেতা আজিজুল বারী রাজিব অভিযোগ করেন, রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মোবাইল ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মীকে মারধর করেন। বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমাকেও মারধর করা হয়।
আহত ছাত্রদল নেতা রাজিব আরও বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনলাম সেখানে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ আছেন। তিনি আমাকে চেনেন। আমি তার সঙ্গে কথা বলার জন্য দেখা করতে চাই। কিন্তু আমাকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি। লাঠিসোটা ও বাঁশ দিয়ে আমাকেসহ চার জনকে মারধর করে আহত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারধরের খবর পেয়ে মহানগর বিএনপির আহবায়ক আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন। একই সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলালও সেখানে গিয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আহত ছাত্রদল নেতা রাজিব ও কাজলকে মারধরের হাত থেকে উদ্ধার করেন।
পরে সদর মডেল খানা পুলিশ দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। রাজিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার জন্য মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদকে দায়ী করেন আহত রাজিবসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারসহ ন্যায়বিচার দাবি করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, দেশব্যাপী বিএনপির সরকার পতন আন্দোলনে বাঁধা সৃষ্টি করতে ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ চেক করলেই সেটা প্রমাণ হবে। আমি জানতে পারি, সরকারি কলেজের তিন শিক্ষার্থী কোচিং শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় কলেজ রোডে তারা ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। এ সময় তাদের মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি হয়। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীরা জখম হয়েছে। তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে ছিনতাইকারী দুই তিনজনকে আটক করে। পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে রাতে সদর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ তদন্ত করছে। কারা কাদের মেরেছে এটা এখনও ক্লিয়ার না। আসলেই ছিনতাইয়ের ঘটনা, নাকি অন্য কিছু সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।