পঞ্চগড়ের মানচিত্র। ফাইল ছবি
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শামীম (২৬) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৫ জুলাই) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মৃত্যুবরণ করলে রোববার (১৬ জুলাই) সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তি হলেন, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, আবুল হোসেনের ছেলে খাজা নাজিম উদ্দিন (২৬), ভাই আজিজার রহমান (৫৫) এবং তার ছেলে বাবু (২৩) ও তানজিদ (২১)।
রোববার দুপুরে গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে পঞ্চগড়ের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলরাম কাজী সোমবার জামিন শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ৮ জুলাই বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নিহত শামীম একই এলাকার সামিউল হকের ছেলে। সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৩ জুলাই নিহত তরুণের চাচা সফিউল আলম বাদী হয়ে পঞ্চগড় আদালতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনসহ ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে ওই তরুণের মৃত্যুর পর রোববার সকালে মামলাটি পঞ্চগড় সদর থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ৮ জুলাই রাতে অপর পক্ষের আনছার আলী বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মারামারির মামলা করেন। মামলায় নিহত তরুণ শামীমও আসামি ছিলেন।
জানা গেছে, হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকার সফিউল আলমের পরিবারের সঙ্গে একই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেনের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ৮ জুলাই সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান লাগানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সফিউল পক্ষের আহত ছয়জনের মধ্যে শামীম ও তাঁর বাবা সামিউলের (৫৫) অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম শনিবার রাতে মারা যান।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ মিঞা গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জমি নিয়ে সংঘর্ষের পর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজে মারা গেছেন ওই তরুণ। রংপুরেই মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।