বসতবাড়ির ৪শ থেকে ৫শ গজের কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা; ভাঙনে সব হারানোর শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবি:একুশে বিডি
কদিন ধরেই তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানিতে তলিয়ে এবং ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড় সিংহেশ্বর মৌজার প্রায় কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল ও বীজতলা। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে কয়েকশ পরিবার। উপজেলা প্রশাসন বলছে, আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তা দিতে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর তীর ভাঙতে ভাঙতে কিছু এলাকায় বসতবাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা। ফলে নদীগর্ভে বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে কয়েকশ পরিবার। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে। অন্যদিকে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে।
তিস্তার তীর ঘেঁষা নীলফামারীর ডিমলার কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম পূর্ব ছাতনাই। গত কয়েক বছর থেকে এ ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডে নদী ভাঙন চলছে; ধীরে ধীরে তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খড়াপাড়া গ্রামের বসতবাড়ির ৪শ থেকে ৫শ গজের কাছ দিয়ে নদী প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে পানি বাড়ায় ভাঙনের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বড় আকারে বন্যা হলে ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাই এবং কয়েক হাজার ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।
গত ২১ জুন থেকে উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। এরপর কয়েক দফায় তিস্তার পানি কখনো বিপৎসীমার ওপরে, আবার কখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি বাড়তে থেকে তিস্তা বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন করে এ ইউনিয়নের কয়েকশ বিঘা জমি ও ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দ্রুত ভাঙন বন্ধের ব্যবস্থা না নেয়া হলে সর্বস্ব হারাতে হবে তাদের।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ভাঙন ঠেকাতে না পারলে যে কোনো সময় এই গ্রামের প্রায় ৪শ পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাদের মাথা গোঁজার ঠাই থাকবে না। অস্থায়ী ভাবে হলেও ভাঙন ঠেকানো দরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের।’
ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফউদদৌলা বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। তা পাওয়া মাত্রই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ডিমলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাদের আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড় সিংহেশ্বর ইউনিয়নের প্রায় ১০টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কম-বেশি ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।