ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানচিত্র। ফাইল ছবি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মোবারক মিয়া ওরফে কানাই মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ রায় দেন।
তিনি অভিযুক্ত কানাই মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডে আদেশের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানারও আদেশ দেয়া হয়। কানাই মিয়া সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্টপাড়ার নিবু মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি কানাই মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, গত ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার জন্যে বাড়ি থেকে বের হয় উপজেলা সদরের পশ্চিম কুট্টাপাড়া গ্রামের আবদুল হাফিজের মেয়ে ও কুট্টাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জয়নব। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তার মরদেহ বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে সরাইল থানায় নারী, শিশু নির্যাতন আইনসহ হত্যার অভিযোগে মামলা করেছিলেন শিশুটির মা ফেরদৌসী বেগম। মামলার একদিন পর তদন্তে কানাই মিয়াকে পুলিশ আটক করে। ওই শিশু ও কানাইয়ের বাড়ি কাছাকাছি। জয়নবের বাড়ির কাছাকাছি কানাই টং দোকানে ব্যবসা করে আসছিলেন।
গ্রেফতারের পর কানাই আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে কানাই জানায়, সে ৪টি বিয়ে করেছে। ভবঘুরে ও বখাটে স্বভাবের কারণে সব স্ত্রী তাকে ত্যাগ করেছে। দাম্পত্য জীবনে তার কোনো সন্তান নেই। ১৬ ডিসেম্বর নিখোঁজের দিন সন্ধ্যার পর শিশুটিকে তার টং দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরে শিশুটিকে হত্যা করে রাতেই লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখে।
এ মামলা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কানাই মিয়াকে অভিযুক্ত করে সরাইল থানা পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক রেজাউল করিম এ মামলায় কানাই মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়ার পাশাপাশি ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
রায় ঘোষণার সময় বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মেরাজুল ইসলাম ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আবু তাহের উপস্থিত আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদেশ সম্পর্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/২ ধারায় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।