কক্সবাজার শহরে ২৩ বছর আগে ‘ডাকাতি করতে গিয়ে’ প্রবাসী শ্বশুরকে হত্যার দায়ের জামাইসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া একজনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় নয়জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোশারফ হোসেনের আদালত এ রায় দেন।
আদালতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শওকত বেলাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণার সময়ে পাঁচজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কক্সবাজার শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টেকনাফ্যা পাহাড় এলাকার মো. হাছানের ছেলে মঞ্জর হোসেন, মৃত মো. কাছিম ওরফে বলীজুরীর ছেলের মো. আলম ও আমির হোসেনের ছেলে আকতার কামাল, পাহাড়তলী এলাকার মো. সৈয়দের ছেলে শহর মুলুক ওরফে কালু ও আব্দুর শুক্কুরের ছেলে মো. মোস্তাক, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার এখালাস মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে কালুইন্যা, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে শাহাব উদ্দিন এবং শহরের উত্তর রুমালিয়ারছড়া এলাকায় বসবাসকারি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে জসিম উদ্দিন।
এ ছাড়া ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার বাসিন্দা এখালাস মিয়া।
হত্যার শিকার মোহাম্মদ হোসেন কক্সবাজার শহরের বাঁচামিয়ার ঘোনার বাসিন্দা। তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন।
মামলার নথির বরাতে এপিপি শওকত বেলাল বলেন, গত ২০২০ সালের ১৩ জুন সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ হোসেন দেশে আসেন। এর দুদিন পর ১৫ জুন রাতে তার জামাই মঞ্জুর হোসেনের নেতৃত্ব একদল দুর্বৃত্ত বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে লুটপাট চালায়। এতে বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা মোহাম্মদ হোসেনকে মাথার পিছনে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ১৭ জুন নিহতের স্ত্রী ছবুরা খাতুন বাদী হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২০০৫ সালের ২৩ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। এতে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড, প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ২ বছর করে সাজা দেয়া হয়।
এছাড়া অপর এক আসামিকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায়ও দেন বিচারক।
বিচারে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মামলার ৯ জন আসামিকে আদালত মুক্তির আদেশ দিয়েছেন বলে জানান শওকত বেলাল।