সোহরাবের হামলার পর হাত ভেঙে যায় রোকসানা বেগমের। কিন্তু মামলা করার ১৯ দিন পার হলেও এখন গ্রেফতার হয়নি আসামি, উল্টো প্রকাশ্যে ঘুরে দিচ্ছে মেরে ফেলার হুমকি। ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীর মাধবদীতে এক বখাটের নামে মারধরের মামলা করে হুমকিতে পড়েছেন ভুক্তভোগী নারী রোকসানা বেগম (৪০)। মামলার ১৯ দিন পার হয়ে গেলেও আসামি সোহরাব (২৬) গ্রেফতার হয়নি। উল্টো প্রকাশ্যে ঘুরে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওই নারীর।
ভুক্তভোগী রোকসানা বেগম জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ মাধবদী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ টাটাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মো. জয়নাল আবেদীনের বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়িও একই এলাকায় এবং বাড়ির মালিক মো. জয়নাল আবেদীন সম্পর্কে তার আত্মীয় হন।
ওই বাড়ির মালিক প্রবাসে থাকায় একই এলাকার মোজাম্মেল হক এর বখাটে ছেলে মাদক কারবারে জড়িত সোহরাব নানাভাবে ওই বাড়িটিকে মাদক বিক্রির ঘাটি হিসেবে ব্যবহারের তৎপরতা চালিয়ে আসছে। বাড়িটির ভাড়াটিয়াদেরকেও বিভিন্ন সময় মারধর ও ভয়ভীতি দেখায় সোহরাব। এছাড়া ওই বাড়ির বিভিন্ন গাছপালা কেটে ক্ষতিসাধন ও জিনিসপত্র চুরি করে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে রাখার ফলে ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়াও টিকে না। সোহরাবের এসব অপকর্মে কেয়ারটেকার রোকসানা বেগম বাধা দিতে গেলে কয়েকদফা মারধরের শিকার হন বলে জানান।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে দফায় দফায় পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও প্রতিকার মেলেনি। সবশেষ গত ২ জুলাই দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে টাটাপাড়া প্রিন্সিপাল বাড়ির মসজিদের সামনে আচমকা হামলা চালায় সোহরাব। এ সময় রোকসানাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দেয়া হয়। পরে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ও স্বজনরা ছুটে আসলে সোহরাব পালিয়ে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসা শেষে ওই নারী মাধবদী থানায় একাধিকবার অভিযোগ করতে গেলেও তা আমলে নেননি মাধবদী থানার ওসি রকিবুজ্জামান। পরে ঘটনাটি নরসিংদীর তৎকালীন পুলিশ সুপার অবহিত হলে তার নির্দেশে গত ৪ জুলাই মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলায় সোহরাবকে প্রধান আসামি করে আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
কিন্তু মামলার ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও গ্রেফতার হয়নি আসামি সোহরাব। উল্টো প্রকাশ্যে বাদীর বাড়ির সামনে দিয়ে ঘুরাফেরা এবং নানাভাবে তাদেরকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ফলে হাত ভাঙার সঠিক চিকিৎসাও করাতে পারছেন না বলে জানান নির্যাতিত ওই নারী। বলেন, ওসির প্রশ্রয়ে আসামি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বিষয়টি তিনি দেখছেন।