ঝাড়গ্রামে হাতির পাল। ছবি: সংগৃহীত
একেই বলে অযাচিত অতিথি। বিয়ে বাড়িতে কেউ তাদের আমন্ত্রণ জানায়নি। তবুও দল বেঁধে চলে এল তারা। তারা আর কেউ নয়, হাতির দল। প্রাণ বাঁচাতে খাওয়া ছেড়ে বিয়েবাড়ি ছেড়ে দৌড় দেন অনেকে। অবস্থা খারাপ দেখে মোটরসাইকেলে চেপে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন বর-কনেও।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার (১৬ জুলাই) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন গ্রামের যুবক তন্ময় সিংহের সঙ্গে বিয়ের দিন ধার্য ছিল একই গ্রামের তরুণী মমপি সিংহের।
পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি সম্প্রতি ত্রিস্তরের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যে কারণে ঝাড়গ্রাম জেলার সব বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল। তবে এরইমধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পরেও হাতির ভয়ে স্থগিত বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারছেন না জেলার মানুষ।
জানা গেছে, রান্নার ঘ্রাণ পেয়ে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে পড়ছে হাতি। তাই বিয়ের মত সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে ভয় পাচ্ছেন গ্রামবাসী। এছাড়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে দল বেঁধে হাতি ঘুরে বেড়ানোয় ভয়ে কোনো অতিথি বিয়েতে যেতে চাচ্ছেন না।
তন্ময় বলেন, হাতি থাকায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের আমরা গিয়ে নিয়ে এসেছি। কনেযাত্রী আসতে প্রায় সাড়ে ১২টা বেজে যায়।
তিনি বলেন, অতিথিরা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ‘এমন সময় হাতির গর্জন শুনতে পাই। আগে থেকেই জানতাম যে রান্নার ঘ্রাণ পেয়ে হাতির পাল সেখানে ছুটে আসে। তাই দ্রুত খাবারের টেবিল ছেড়ে বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে বলি অতিথিদের। পরিস্থিতি আচ করতে পেরে স্ত্রীকে নিয়ে আমিও ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়ি।’
তন্ময়ের বাবা তপন সিংহ আক্ষেপ করে বলেন, ‘৫০০ জন আমন্ত্রিত ছিলেন। ৬৫ জন কনেযাত্রী-সহ মোট ২৭০ জন খেয়েছেন। বেশিরভাগই হাতির ভয়ে আসতে পারেননি। অনেকে খেতে বসে হাতির ডাক শুনে উঠে গিয়েছেন। প্রচুর খাবার নষ্ট হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অন্তত ১০০টি হাতি এলাকায় ঘুরছে। তারা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে প্রায়ই হানা দিচ্ছে লোকালয়ে।