রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে ‘আইসিটি প্রশিক্ষণ কোর্সের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অতিথিরা। ছবি সংগৃহীত
তৃতীয় লিঙ্গ ও দেশের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এন্টাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট (সিড)’ প্রকল্প গ্রহণ করবে সরকার।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে তৃতীয় লিঙ্গ/রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষকে আইসিটি বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ‘আইসিটি প্রশিক্ষণ কোর্সের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত, তৃতীয় লিঙ্গ/রূপান্তরিত লিঙ্গ, পতিতালয় এবং জেলে থাকা প্রায় ৮০ হাজার তরুণ-তরুণী যারা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায় না, তাদের জন্য আমরা দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এন্টাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট (সিড)’ নামে একটি চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট ডিজাইন করছি। আমাদের লক্ষ্য–বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে সরকারের সেবা বা সহায়তার বাইরে না থাকে। তাদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করাই আমাদের মূল কাজ।’
পলক বলেন, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে কোডারসট্রাস্ট-এর মাধ্যমে ৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে তৃতীয় লিঙ্গের পাঁচ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ এবং ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন থেকে রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষকে ভালোবাসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। নাগরিক সনদপত্রে মায়ের নামের পাশাপাশি লিঙ্গের স্থানে তাদের সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আইনগতভাবে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এটা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়ে এরই মধ্যে তাসনুভা আনান শিশির বৈশাখী টেলিভিশনে সংবাদ পাঠ করে প্রমাণ দিয়েছেন, একটু সুযোগ পেলে তারা যেকোনো নারী-পুরুষ থেকে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য: ভবিষ্যতে যেন কেউ পিছিয়ে পড়ে না থাকে।’
সুবিধাবঞ্চিতদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকায় ‘জব ফেয়ার’ করা হবে মন্তব্য করে পলক বলেন, ‘আমরা এফবিসিসিআই, বেসিস, ই-ক্যাবসহ আমাদের যত বন্ধুসংস্থা আছে, তাদের নিয়ে শুধু সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে বড় পরিসরে একটি স্মার্ট এমপ্লয়মেন্ট ফেয়ার করব।’
আগামী দিনে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে দেখা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমেদ, কোডারসট্রাস্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বেসিসি) নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার এবং প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন পরিচালক গোলাম সারওয়ার প্রমুখ।