ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে এক নারী। ছবি সংগৃহীত।
অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং কিংবা ভাড়ায়চালিত বাইকারদের বিরুদ্ধে প্রায়ই হয়রানির অভিযোগ ওঠে নারীদের পক্ষ থেকে। কখনো কখনো হয়রানির মাত্রা পৌঁছে যায় যৌন হয়রানি পর্যন্ত। এমনকি রাইড শেষ হলেও মেলে না মুক্তি।
দিন দিন নারীর জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা। বারবার ব্রেক করা, স্বল্প দূরত্বের পথ অধিক ঘুরিয়ে নেয়া, এমনকি রাইড শেষে ফোন ও মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করার মতো অভিযোগ করছেন কেউ কেউ। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অ্যাপে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলেও জানান তারা।
বারবার মোবাইলে কল ও মেসেজ দিয়ে হয়রানির ঘটনা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বেশির ভাগ সময়ই সংশ্লিষ্ট অ্যাপে অভিযোগ দিলেও মেলে না প্রতিকার। নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে নারী হয়রানির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। শাস্তি না হওয়ায় বাড়ছে হয়রানির ঘটনা।
এমনই এক ভুক্তভোগী সুনেহরা আজমী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলের জন্য গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যবহার করেন উবার, পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। খুব তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেলও বেশ কয়েকবার পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়।
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাইকার আলোচনা শুরু করে দেন যে আমি কোথায় থাকি বা এ-জাতীয় নানান বিষয়। ভদ্রতার খাতিরে আমি উত্তর দিই। তারপর রাস্তার মধ্যে এমন কিছু জায়গায় হার্ড ব্রেক করা হয়, যেখানে হার্ড ব্রেকের কোনো প্রয়োজন নেই।’
আরেক শিক্ষার্থী রুবাইয়া সুলতানা বলেন, ‘আমি জানি যে এই রাস্তাটা সংক্ষিপ্ত। কিন্তু সেই রাস্তায় যেতে রাজি না। তারপর বলে নেমে যেতে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) ফারুক হোসেন জানান, ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন না তারা।
ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গাড়ি চলাকালে ভুল পথে নিয়ে অশালীন আচরণ করার চেষ্টা করলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের সহায়তা নিতে পারেন। পরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নারী অধিকার কর্মী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, নারীর প্রতি এটা একধরনের সহিংসতাই। রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনশৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে। না হলে তো ক্ষতিটা সমাজ ও দেশের। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন।
সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান তার।