ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ। ছবি সংগৃহীত।
বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এরমধ্যে শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বিএনপিকর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেলা ১১টার পর পরই ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন তারা। কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
পুলিশি বাধার কারণে ভেন্যু পরিবর্তন করে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে নেতাকর্মীরা মাতুয়াইল শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। ধোলাইপাড় থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাবুবাজাত ব্রিজের দিকে যেতে দেখা যায়।
সংঘর্ষের মাঝেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্ট করে পুলিশ। তবে এর মধ্যেই এক ফাঁকে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বিএনপিকর্মীরা। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পুলিশের জলকামানের ওপর হামলা করছেন তারা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ছবি
এদিকে যাত্রাবাড়ীতে সংঘর্ষের সময় আহত হন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। গয়েশ্বর চন্দ্র ছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
গাবতলীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও আবদুল্লাহপুরেও সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর উত্তরায়ও দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্ট করছে পুলিশ। ছবি:
এদিকে সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। সেইসঙ্গে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বাবুবাজার ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে কদমতলী এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
কোনো কোনো জায়গায় অবস্থান নিতে চাইলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। কয়েক জায়গায় মাইক, চেয়ার জব্দ করে নেয়া হয়।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ থেকে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগও। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কর্মসূচি পালনে অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। রাতে ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগ থেকে পাঠানো এসএমএসে ডিএমপি কমিশনারকে উদ্ধৃত করে এ কথা জানানো হয়।
এরপর আওয়ামী লীগ কর্মসূচি থেকে সরে এসে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু শনিবার সকাল থেকেই সড়কে অবস্থানের চেষ্টা করে বিএনপি। লাটিসোঁটা হাতে সড়কে নামেন তারা।