নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা (ফাইল ছবি)
নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে থাকছে না ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের আলোচিত-সমালোচিত অনুসন্ধানী পাঠ বইটি। অনুসন্ধানী পাঠের সমালোচিত বিষয় বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অনুশীলনী পাঠেই থাকবে জানিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, বইয়ের সংখ্যা কমাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তবে গবেষকরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাইলটিংসহ যাচাই-বাছাইয়ের অভাবে বাদ দিতে হচ্ছে পাঠ্যবই।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ট ও ৭ম শ্রেণিতে চালু হয় নতুন শিক্ষাক্রম। যুক্ত হয় ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ নামের দুইটি বই। অনুসন্ধানী পাঠে বিবর্তনবাদসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ফলে দুই মাসের মাথায় ফেব্রুয়ারিতে বই দুটি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরে অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে বইটির নানা অংশের সংশোধনী প্রকাশ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
তবে প্রত্যাহার ও সংশোধনীর পর এবার আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের অনুসন্ধানী পাঠ বইটি বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি। তবে থাকবে অনুশীলন পাঠ। প্রাচীন ইতিহাস ও সভ্যতার স্থলে গুরুত্ব পাবে আধুনিক ইতিহাস।
সমালোচিত অংশ বাদ দিয়ে অনুসন্ধানী পাঠের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু অনুশীলনী পাঠেই সন্নিবেশ করা হবে। আর শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমাতে এই উদ্যোগ বলে দাবি পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের।
এনসিটিবি’র সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন,
ওইটা একদম রিসোর্স একটা বই ছিল। যেটা থেকে বাচ্চাদের ছবিগুলো দেখে প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে ধারণা নেয়ার সুযোগ ছিল। সেজন্য বইটা দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে সভা করে আমাদের লেখক কমিটি ও মন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, আসলে দুটি বই দরকার হয় না। তাই আগামী বছর থেকে একটা বইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে আগানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানী পাঠ বলে আগে যেটাকে আলাদা করেছিলাম, সেখানে যে ধরনের তথ্যগুলো দেয়া অনিবার্য, এখন সেগুলোকে আমরা একটা বইয়ের মধ্যে নিয়ে আসবো।’
আর শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাইলটিং ও গবেষণা কার্যক্রম না হওয়ায় চালুর এক বছরের মধ্যেই বাদ দিতে হচ্ছে পাঠ্যবই।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন,
যথাযথভাবে পাইলটিংটা করা হয়নি। যথাযথভাবে পাইলটিং করা হলে যে ভুলটা আমরা এখন মেনে নিচ্ছি, সেটা আর প্রত্যাহার করার প্রয়োজন হতো না।
এ ছাড়া আগামী বছর থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে আরও বেশি যাচাই বাছাইয়ের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।