আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হচ্ছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদকে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপর চার আসামিকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (৩০ জুলাই) বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চায়। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমুর আদালত পৃথক এ আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন- কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন, বিএনপি কর্মী কবির, সোহাগ গাজী ও মো. রিয়াজ উদ্দিন রাজু।

এর আগে শনিবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সূত্রাপুর থানার এসআই নাসির উদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ ২৪ নেতাকর্মীকে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০/৪০০ নেতাকর্মীকে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শনিবার ধোলাইখাল গোয়ালঘাট নাসির উদ্দিন সর্দার লেনের মনসুর মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করেন এবং যান চলাচলসহ সাধারণ জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করতে থাকেন।

বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর রায় চৌধুরী, নিপুণ রায় চৌধুরী ও ইশরাক হোসেনদের অনুমতিবিহীন অবস্থান কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করে পুলিশ। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার সময় নিপুণ রায় চৌধুরীর নির্দেশে এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিসহ আশপাশ থেকে আসা অজ্ঞাতপরিচয় আরও আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে, কিন্তু অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিশৃঙ্খলাকারী আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেলসহ সঙ্গে নিয়ে আসা প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আক্রমণ করেন।

একপর্যায়ে সূত্রাপুর থানায় কর্মরত এসআই মো. নাহিদুল ইসলামের ওপর প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও ইট-পাটকেল এলোপাতাড়িভাবে নিক্ষেপ করায় হেলমেট খুলে যায় এবং মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। সরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এপিসিসহ ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা উচ্ছৃঙ্খল আসামিরা বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশের ওপর হিংস্র ও আক্রমণাত্মকভাবে চড়াও হয়ে ইট-পাটকেল ও একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন এবং আশপাশের দোকান ও বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে দোকান ও বাড়িঘরের ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ সরকারি সম্পত্তি, জানমাল রক্ষার্থে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যদের ইস্যু করা অস্ত্র শর্টগানের কার্তুজ ও গ্যাসশেল নিক্ষেপ করে।