র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ৫ অপহরণকারী। ছবি সংগৃহীত
সুন্দরবনে ১৪ জেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির অপরাধে ৫ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। একইসঙ্গে ১৪ জন অপহৃত জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার এম সারোয়ার হুসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাগেরহাট জেলার মোংলা থানা এবং খুলনা জেলার দাকোপ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় খুলনার দাকোপ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, সঞ্জয় বাইন (৩৪), মো. গাউস (৩০), মঞ্জুআরা বেগম ময়না (৩৪), মো. আল আমিন হাওলাদার (২৮) ও রবিউল হাওলাদার (৩৩)।
র্যাব জানায়, গত ২৩ জুলাই খুলনার দাকোপ উপজেলার সুন্দরবনের গহীনে ভদ্রা নদীর টগিবগী খালের ওপর জেলেরা ডিঙ্গি নৌকাসহ মাছ ধরার সময় অপহরণের উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওঁত পেতে থাকা দস্যুরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জেলেদেরকে নৌকা থেকে তুলে নেয়। এসময় তাদের অপহরণকারীদের নৌকায় তুলে এলোপাথাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকে। বিভিন্ন হুমকি দিয়ে জেলেদের জোরপূর্বক গহীন সুন্দরবনের অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে নির্যাতন শুরু করে।
পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে জেলে পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে জেলেদের খুন করে মরদেহ গুম করবে বলে পরিবারকে হুমকি দেয়। তখন মৃত্যুর ভয়ে জেলেদের পরিবারের লোকজন ২ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। পরে তারা একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে।
জেলেদের পরিবারের লোকেরা একইদিন বিকালে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের কাছে থেকে ধারদেনা করে সর্বমোট ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ বাবদ অপহরণকারীদের বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। পরে ভিকটিম জেলেদের পরিবারের সদস্যরা র্যাব-৬ খুলনাকে অপহরণের বিষয়টি জানালে র্যাবের একটি আভিযানিক দল অপহৃত ভিকটিমদেরকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদেরকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে।
র্যাব আরও জানায়, গত ২৮ জুলাই রাতে র্যাব-৬ খুলনার একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাট জেলার মোংলা থানা এবং খুলনা জেলার দাকোপ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণের সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করে। এসময় অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্তিপণের ৪০ হাজার টাকা উদ্ধারসহ ১৪ জন অপহৃত জেলেকে উদ্ধার করে।
কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার এম সারোয়ার হুসাইন জানান, এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে উদ্ধার ভিকটিম ও গ্রেফতার আসামিদের দাকোপ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।