লড়ছেন দুই কুস্তিগির। ছবি একুশে বিডি।
হারিয়ে যাওয়া আনন্দ বিনোদনের গ্রামীণ মাধ্যমগুলো ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ ৩০ বছর পর নেত্রকোনার জামতলা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐহিত্যবাহী কুস্তি খেলা। এমন আয়োজন দেখতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ ভিড় জমিয়েছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের জামতলা বাজারের পাশে শাহপুর গ্রামে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামতলা বাজারের উদ্যোগে আয়োজিত এ কুস্তি খেলায় সহস্রাধিক দর্শকের সমাগম হয়েছে।
আয়োজকরা জানায়, নতুন প্রজন্মের অনেকেই শুধু কুস্তি খেলার নাম শুনেছে, কখনো দেখা হয়নি তাদের। তাই এমন আয়োজনে তারা ব্যাপক উৎসাহ দেখিয়েছে।
কুস্তিগিররা জানায়, এক একজন কুস্তিগিরকে স্থানীয় ভাষায় মাল বলা হয়। আগের দিনে কুস্তিগিরদের বেশ কদর থাকলেও গ্রামে এখন তেমন কুস্তিগির তৈরি হচ্ছে না। দিনে দিনে হারিয়ে যাওয়া এসব খেলাধুলায় মানুষের বিনোদনের পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতাও নিশ্চিত হতো বলে জানায় কুস্তিবিদরা। তাই নতুন প্রজন্মকে মোবাইল ডিভাইসসহ মাদক থেকে সরিয়ে আনতে গ্রাম পর্যায়ে আবারো আয়োজন করা হয়েছে এমন ঐহিত্যবাহী কুস্তিখেলার।
কুস্তি খেলা অনুষ্ঠানে জেলা কৃষকলীগের যুগ্মআহ্বায়ক মোতালিব খান রানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিশেবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান। তিনি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ।
প্রতিযোগিতায় নিবন্ধন ফি দিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক কুস্তিগির অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনকে মেডেল, ১৫ জনকে ছাতা, ১২ জনকে মোবাইল, ২ জনকে স্মার্ট ফোন, ২ জনকে খাসি ও একজনকে খাসির সমান বড় একটি ষাঁড়ের বাছুর উপহার দেয়া হয়েছে।
এদিকে, সোমবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উপেক্ষা করে খেলায় সহস্রাধিক দর্শক গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলা উপভোগ করেছেন। তাদের দাবি, গ্রাম পর্যায়ে প্রতিনিয়ত এই ধরনের গ্রামীণ খেলাগুলো চালু করা।
আয়োজক কমিটির সভাপতি মোতালিব খান রানা জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে এমন আয়োজন করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে আরও ভালো ভালো খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।