পর্যটন সেবাদানকারী কোম্পানি ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গুইলার্মো সনলেইন। ছবি: সংগৃহীত
শুক্র গ্রহে বসতি গাড়তে চান সমুদ্র পর্যটন সেবাদানকারী কোম্পানি ওশানগেটের আরেক প্রতিষ্ঠাতা গুইলার্মো সনলেইন। শুধু তাই নয়, ২০৫০ সালের মধ্যে সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহে অন্তত এক হাজার মানুষ পাঠাতে চান তিনি। চলতি সপ্তাহে দুঃসাহসিক এই অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন সনলেইন।
সম্প্রতি আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে ধ্বংস হয় ক্ষুদ্র সাবমেরিন টাইটান। এতে দুই পাকিস্তানিসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ছিলেন টাইটানের মালিক ওশানগেট কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টক্টন রাশ।
এখন থেকে ১৪ বছর আগে ২০০৯ সালে স্টক্টন রাশের সঙ্গে মিলে ওশানগেট প্রতিষ্ঠাতা করেন গুইলার্মো। কিন্তু চার বছর পর ২০১৩ সালে কোম্পানি থেকে বের হয়ে যান তিনি। প্রতিষ্ঠা করেন ‘হিউম্যানটুভেনাস’। যার লক্ষ্য সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহে মানুষের স্থায়ী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন তার সবকিছু করা।
ওশানগেটের টাইটান ট্রাজেডির পর সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডারকে একটি সাক্ষাৎকার দেন গুইলার্মো। তাতে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। জানান, শুক্র গ্রহ নিয়ে তার একটি উচ্চাভিলাস রয়েছে। টাইটান ট্র্যাজেডির মতো দুর্ঘটনা সত্ত্বেও মানুষের উচিৎ তার সীমাবদ্ধতা ভেঙে সামনে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
গুইলার্মো বলেন, পৃথিবীবাসীকে বহু গ্রহে বসবাসকারী একটি প্রজাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যে শুক্র গ্রহে মানববসতি গড়তে চান এবং আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে অন্তত এক হাজার মানুষকে সেখাতে নিতে চান।
বিজনেস ইনসাইডারকে গুইলার্মো বলেন, তার ‘এই পরিকল্পনা কোনো পাগলামি নয়। বরং এটি ২০৫০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে দশ লাখ মানুষ নেয়ার চেয়ে কম উচ্চাভিলাষী’। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী ইলন মাস্কের মঙ্গল অভিযানের অভিলাসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তিনি।
মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্ত, মহাকাশ গবেষণা ও মহাকাশযান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের মালিক বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক মঙ্গলে বসতি গড়া নিয়ে কাজ করছেন। সম্প্রতি মাস্ক জানিয়েছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে ১০ লক্ষ মানুষ দেখতে চান তিনি।
শুক্র গ্রহে মানুষের বসতি সম্ভব কিনা তা নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একটি গবেষণার ফলাফলের প্রতি ইঙ্গিত করেন গুইলার্মো। নাসা বলছে, শুক্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০ মাইল ওপরে এমন একটি পরিবেশ বিদ্যমান যেখানে বেঁচে থাকতে সক্ষম হবে।
গুইলার্মোর পরিকল্পনা, শুক্র গ্রহে একটি ফ্লোটিং কলোনি তথা ভাসমান বসতি তৈরি করবেন তিনি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সালফিউরিক অ্যাসিড বৃষ্টি। তবে গুইলার্মোর মতে, এ সমস্যাও সমাধান সম্ভব।
সেই ভাসমান বসতি কিভাবে নির্মাণ করা হবে ও কিভাবে সেখানে এক হাজারের মানুষের থাকার ব্যবস্থা করা হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত বলেননি গুইলার্মো। তবে এটা করা সম্ভব বলেই মনে করেন তিনি। তার কথায়, ‘এটা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু ২০৫০ সালের মধ্যে এটা করা সম্ভব।’