ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ছবিটি ভিডিও থেকে নেয়া
একটি অপমৃত্যুর মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিলো ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বলছে, অপমৃত্যু নয়, খুন করা হয়েছিলো আবুল হাসান (রনি) নামের ওই ব্যক্তিকে। আর মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে শনাক্ত করা হয়েছে খুনিকেও। দুই বছর আগের ওই খুনের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। সম্প্রতি এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
উপপুলিশ কমিশনার বলেন, গত বুধবার যশোরের বেনাপোল থেকে মারুফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি। হত্যাকাণ্ডে দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০২১ সালের ১ জুন আবুল হাসান (রনি) নামের এক ব্যক্তিকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন কয়েকজন যুবক। ওই দিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন আবুল হাসানের বাবা। সম্প্রতি মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পায় পুলিশ। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এটি অপমৃত্যু নয়; হত্যা করা হয়েছিলো আবুল হাসানকে। রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকার একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন তিনি। ২০২১ সালের মে মাসের এক সন্ধ্যায় নীলক্ষেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ এবং তার দুই বন্ধু তরিকুল ও রাজিব হোসেনের সঙ্গে আবুল হাসানের দেখা হয়। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে মাদককে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এর জের ধরে এক সপ্তাহ পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবুল হাসানের ওপর হামলা চালান মারুফ ও তার দুই বন্ধু।
মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনো একটি কাজে আবুল হাসান আসেন, তখন এ তথ্য পেয়ে এ হলের (মাস্টারদা সূর্যসেন হল) তারেক, রাজিব ও সুজন দৌড়ে আসে। একপর্যায়ে রনিকে তারা বেধড়ক মারধর করে, তারেক লাথি মারে তাকে। ওই লাথির পর রনি একটি দেয়ালে গিয়ে মাথায় ধাক্কা লেগে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। গুরুতর এ আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পুলিশ প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবুল হাসানকে ভর্তির কাগজ পরীক্ষা করেন। সেখানকার নিবন্ধন খাতায় একটি নাম ও একটি মোবাইল নম্বর পান। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই চলে তদন্ত, শনাক্ত করা হয় খুনিকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি খাতায় তারা ভুল নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছিল, তবে একটা মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিল। তবে পুলিশের চুলচেরা বিশ্লেষণে এটা আমরা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি শনাক্ত ও ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ বলেও জানান তিনি।