২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে আফগান শরণার্থী ব্যাপক বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
অবৈধভাবে পাকিস্তানে থাকা প্রায় ১৭ লাখ আফগান নাগরিককে আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। এই সময়ের মধ্যে দেশ না ছাড়লে বলপূর্বক উচ্ছেদ করা হবে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনা জারি করেছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, অবৈধভাবে পাকিস্তানে থাকা আফগান নাগরিকরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। যার ফলে দেশে অপরাধ বাড়ছে। সেই কারণে পাকিস্তান সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এরইমধ্যে এর জন্য একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও যে সব অবৈধ বিদেশি নাগরিকরা দেশ ছাড়বে না, তাদের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পত্তি এবং ব্যবসা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
তিনি জানান, পাক গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের খুঁজে বের করবে এবং কর্তৃপক্ষ সেই সম্পত্তি এবং ব্যবসা বাজেয়াপ্ত করবে। অপরাধীদের পাকিস্তানিদেরও আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি না হওয়া সত্ত্বেও যাদের কাছে পাকিস্তানের পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
বুগতি বলেন, একটি সার্বজনীন হেল্প লাইন নম্বর এবং একটি ওয়েব পোর্টালও চালু করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কেউ ভুয়া পরিচয় দিয়ে থাকলে যে কেউ তার বিরুদ্ধে ওই পোর্টাল এবং হেল্প লাইনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তথ্য দেয়ার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ২৪টি আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিল আফগানের নাগরিক।
পাকিস্তানের দাবি, আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পরে বেআইনিভাবে সীমানা পেরিয়ে পাকিস্তানে চলে এসেছেন প্রায় ৬ লাখ আফগান নাগরিক।
বিদেশে আশ্রয় নেয়ার অধিকার আন্তর্জাতিক আইনের অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তানে কয়েক লাখ আফগান শরণার্থী রয়েছে। বিশেষ করে ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর এই সংখ্যা বেড়েছে।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ১৩ লাখ আফগান পাকিস্তানে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত রয়েছে এবং আরও ৮ লাখ ৮০ হাজার আফগান পাকিস্তানে থাকার আইনি মর্যাদা পেয়েছে। তবে আরও ১৭ লাখ আফগান এখনও পাকিস্তানে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থান করছে যারা শরণার্থীর মর্যাদা পায়নি।