রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি সংগৃহীত
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রী হিসেবে ভুলত্রুটি হয়তো তারও ছিল। তবে প্রমোশন-টেন্ডার বাণিজ্য বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ যেসব দাবি উত্থাপিত হয়েছে তা এতো অল্প সময়ে ফেরেশতারাও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সিডিউল নভেম্বরের মাঝামাঝি ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। দাবি অনুসারে এখন আর আইন পরিবর্তন বা সংশোধনের সময় নেই, জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সবাইকে৷ যারাই নির্বাচনে জয়ী হবেন; তারাই পরবর্তীতে আইনের সংশোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন,
মন্ত্রী হিসেবে ভুলত্রুটি আমারও ছিল হয়তো। তবে প্রমোশন-টেন্ডার বাণিজ্য বন্ধের চেষ্টা করেছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। সড়ক পরিবহন আইনের সংশোধনসহ যেসব দাবি উত্থাপিত হয়েছে এতো অল্প সময়ে তা ফেরেশতারাও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
রাজনীতির সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা অবরোধের নামে আবারও আগুন সন্ত্রাসের হুমকি আসছে, বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, মহাসড়কে ধীরগতির যান নছিমন-করিমন-ভটভটির চলাচল বন্ধ, চালক এবং হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান। মহাসড়কে আশঙ্কাজনকহারে মোটরসাইকেল বেড়ে যাওয়াকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে বাস পোড়ানো হলে তার প্রতিবাদ করবে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিকরা।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন দাবি জানান, নিরাপদে সড়ক ব্যবহারের শিক্ষা স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রত্যেকটা স্কুলে নিরাপদ সড়ক ইউনিটের ব্যবস্থা করার।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, চালকদের ঘাতক না বলে তাদের সেবাকারী বলুন।
পুলিশি তদন্তের ক্ষেত্রে সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত গবেষকদের রাখার দাবি জানান তিনি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিবহন শ্রমিকদের রক্ত দিয়ে কাউকে ক্ষমতায় যেতে দেব না বলেও হুঁশিয়ারি দেন শাজাহান খান।
এর আগে সড়কে আর রক্ত নয় এমন স্লোগান নিয়ে পালিত হয়েছে নিরাপদ সড়ক দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। রঙ-বেরঙের ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন আর বাদক দল সহযোগে সকালে দোয়েল চত্বর থেকে সড়ক বিভাগ হয়ে ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে পর্যন্ত করা হয় এ শোভাযাত্রা। যোগ দেয় ট্রাফিক পুলিশ, পুলিশ, স্কাউট, গার্ল গাইডসের সদস্যরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে পথে পথে লিফলেট বিতরণ করা হয় সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে।
নিরাপদ সড়ক দিবসের শোভাযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় হাইওয়ে পুলিশ প্রধান শাহাবুদ্দিন খান জানান, মহাসড়ককে নিরাপদ করতে মামলার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে আইন প্রয়োগ করতে গেলে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করেন।
তিনি আরও বলেন, সড়ক ও মহাসড়ক ব্যবহারে সাধারণ মানুষ এবং গাড়ির চালকদের সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জনসচেতনতামূলক বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হবে বলেও জানান হাইওয়ে পুলিশ প্রধান।