ফাইল ছবি
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে সামরিক ব্যারাক, কারাগার এবং আরও কয়েকটি স্থানে হামলার ঘটনায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। হামলার পর রাজধানীর একটি কারাগার থেকে প্রায় ২০০০ জন বন্দি পালিয়ে গেছে। এই সহিংসতার জন্য বিদ্রোহী সেনাদের দায়ী করেছে সরকার। আকস্মিক এই হামলার ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার সিয়েরা লিওনের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোববার রাজধানী ফ্রিটাউনের বেশ কয়েকটি স্থানে হামলার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট আর্নেস্ট বাই কোরোমার দেহরক্ষীরা জড়িত। বর্তমান সরকারকে উৎখাতের জন্য এটি একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর কারাগারে হামলার পর সিয়েরা লিওনের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে আসা ১৮৯০ জন বন্দির মধ্যে ১৫৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং ৮৩১ জন দীর্ঘ মেয়াদে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সেখানে ২০ জন বিদেশি নাগরিক ছিল যাদের মধ্যে ১০ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং বাকিরা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এছাড়া ২৫৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং ৩৪৭ জনকে বিচারাধীন হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। আরও শতাধিক বন্দিকে স্বল্পমেয়াদী সাজা দেওয়া হয়েছে এবং দুজনকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল ইসা বেঙ্গুরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামলায় মোট ২০ জন নিহত হয়েছে; তাদের মধ্যে ১৩ জন সৈন্য, ৩ হামলাকারী, এক পুলিশ কর্মকর্তা, এক বেসামরিক ও একজন বেসামরিক নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন।আরও আটজন আহত হয়েছেন, এবং তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তিনি বলেন।
স্থানীয় সময় রোববার এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। রোববার ভোরের দিকে রাজধানী ফ্রিটাউনের বিভিন্ন অংশ থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে পুরো নগরীতে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে দেশটির সরকার জানিয়েছে, তারা হামলা প্রতিহত করেছে।
দুই ঘণ্টার অভিযানে পদেম্বা রোড কারাগার ভেঙ্গে ১৮৯০ জন বন্দীকে পালাতে সহায়তা করে হামলাকারীরা। সোমবার পর্যন্ত মাত্র ২৩ জন বন্দী ফিরে এসেছেন বলে কারা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাডা বায়ো রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া হামলার সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়।