বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে ভিসির কার্যালয়ে প্রথম সভা শেষে, তার বাসার দিকে রওনা হন ঢাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ছবিটি ভিডিও থেকে নেয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) ঢাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সকালে উপাচার্য (ভিসি) এ এস এম মাকসুদ কামালের কার্যালয়ে প্রথম এ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ সভা শেষ হয়। এরপর ভিসির বাসার দিকে রওনা হন ঢাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এ সভায় সিদ্ধান্ত হয় ঢাবি বন্ধের ।
সভায় যোগ দেয়া সিন্ডিকেট সদস্য আবুল মনসুর আহাম্মদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১০টায় সিন্ডিকেটের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুরু হয় জরুরি সিন্ডিকেট সভা। এ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল কখন শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করবেন। এক ঘণ্টা পর সভা শেষে বাইরে আসেন উপাচার্যসহ অন্যান্য সদস্যরা। এসময় গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তারা। বিজিবি ও পুলিশ নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয় তাদেরকে। এরপর উপাচার্যের বাসভবনে বৈঠক চলে। এ বৈঠক শেষে ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শ্রেণি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেশ কয়েকটি হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হল কর্তৃপক্ষ। ছাত্র রাজনীতি আর থাকবে না- এই মর্মে লেখা ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন হলের প্রভোস্টরা। মধ্যরাত থেকে এ ঘোষণা দেয়া শুরু হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আজ এ সভা ডাকা হয়। কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন, দফায় দফায় সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার বিষয়ে নির্দেশনা দিতে উপাচার্যদের চিঠি দেয় ইউজিসি।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হামলায় কমপক্ষে ছয় জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অনেকে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কোথাও ছাত্রলীগ-যুবলীগ, কোথাও পুলিশ সংঘর্ষে জড়ায়। নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামে তিন জন, ঢাকায় দু’জন ও রংপুরের একজন রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল বিকেল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ইউজিসি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনা দেয়া হয়।