উগান্ডার বুন্দিবুগিও জেলায় ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ নামের নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ ‘নাচের মতো শরীর নড়াচড়া করা’। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম মিন্ট এর দেয়া তথ্যমতে একের পর এক নারী ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসে।
উগান্ডার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে প্রথমবার ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ রোগের কথা জানা যায়। যারা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের লক্ষণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণ।
এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা,করোনাভাইরাস, ম্যালেরিয়া, হাম হলে যেরকম শ্বাসকষ্ট হয়, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগেও সেই লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। তাদের প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। তবে ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগ ঠিক কী কারণে হচ্ছে, সেটা এখনও ধরতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
এদিকে ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএনএস জানায়, এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর আসে এবং দেহ কাঁপতে কাঁপতে নাচের মতো অবস্থা হয়।
বুন্দিবোগিও জেলার চিকিৎসা কর্মকতর্কা ডা. ক্রিস্টোফার সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘অনেকেই স্থানীয় কবিরাজদের পরামর্ষে ভেষজ ওষুধ সেবন করছেন, কিন্তু এ ধরনের ওষুধে কোনো উপকার হয়— বৈজ্ঞানিকভাবে এখনও এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে চিকিৎসা করছি এবং অধিকাংশ রোগীই এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আমি স্থানীয় লোকজনকে অনুরোধ করব, অসুস্থতা দেখা দেয়া মাত্র নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।’
তবে এখন পর্যন্ত বুন্দিবুগিও জেলার বাইরে কোনো রোগী ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন— এমন সংবাদ পাওয়া যায়নি। আক্রান্তদের শারীরিক পরীক্ষার নমুনা উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত সেগুলোর ডায়াগনসিস হয়নি।
উগান্ডার নারীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা অবশ্য খুব সন্তোষজনক নয়। দেশটির সরকারি পরিসসংখ্যান বলছে, দেশটিতে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে মৃত্যু হয় ৪৪০ জনের। অনিরাপদ গর্ভপাত, সংক্রমণ, সন্ত্রান জন্ম দেওয়ার সময় অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণ এবং গর্ভধারণ অবস্থায় ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার নারীর মৃত্যু হয় উগান্ডায়।