ফ্রান্স সতর্ক করে দিয়েছে যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি নতুন চুক্তি না হলে সামরিক সংঘর্ষ “প্রায় অনিবার্য” হয়ে উঠতে পারে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সংসদীয় শুনানিতে বলেন, “আমাদের হাতে মাত্র কয়েক মাস সময় আছে এই (২০১৫ সালের) চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে। ব্যর্থতার ক্ষেত্রে, সামরিক সংঘর্ষ প্রায় অনিবার্য বলে মনে হচ্ছে।”
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত যৌথ সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা (JCPOA) চুক্তিটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সীমিত করেছিল। তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় এবং ইরানের ওপর পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর থেকে তেহরান ধাপে ধাপে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে গেছে।
ব্যারো বলেন, “আমরা এখনও কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে রয়েছি, কিন্তু সময় ফুরিয়ে আসছে।”
সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারস্য উপসাগরে যুদ্ধজাহাজ ও স্টিলথ বোম্বার মোতায়েন করেছে, যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, ইরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে যে, তার ওপর কোনো সামরিক হামলা হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। ইরানি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, তবে পশ্চিমা দেশগুলো সন্দেহ করছে যে, তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।
ইউরোপের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি নতুন আলোচনার জন্য ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইউরোপীয় কূটনীতিকরা আশা করছেন, বর্তমান উত্তেজনা প্রশমিত করতে তারা একটি বিকল্প চুক্তির পথে এগোতে পারবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি দ্রুত কোনো সমাধান না বের করা যায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় ধরনের সামরিক সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে, যা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
(সূত্র: ASHARQ AL-AWSAT)