বরিশাল:-বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) বরিশাল বিভাগের সরকারি অফিসগুলোর কাছে ৬৭ শতাংশ বিল বকেয়া পড়ে আছে। ব্যক্তি পর্যায়ে বকেয়ার পরিমান ৩৩ শতাংশ। জরিমানার বিধান না থাকায় গ্রাহক পর্যায়ে শুধু নোটিশ চালাচালিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। বিপরীতে দিনে দিনে বাড়ছে বকেয়ার পরিমাণ।
জানা গেছে, ব্রিটিশদের তৈরি করা ১৮৮৫ সালের টেলিগ্রাফ আইন ৭ (ক) কার্যবিধি অনুযায়ী ৩৮৬-১ (ক) ধারা মোতাবেক বিল পরিশোধ না করা ব্যক্তি পর্যায়ে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে বিটিসিএল। মামলার আওতামুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব প্রতিষ্ঠানে বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বিটিসিএল।
ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিফোন ও ইন্টারনেট বিল প্রদানে গড়িমশি করে। যুগ যুগ ধরে বিশাল অংকের বিল বকেয়া থাকলেও আদায় করা সম্ভব হয় না। ওদিকে ব্যক্তি গ্রাহকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় সর্বোচ্চ রায় হতে পারে বিলের সমপরিমাণ মাল ক্রোক।
১৪০ বছর আগে চালু হওয়া এই আইন অনুসারে বিটিসিএল পরিচালিত হওয়ায় বকেয়া উদ্ধার করা সম্ভব হয় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। সাধারণত মামলার রায়ের নোটিশ পাওয়ার পর কোনো কোনো গ্রাহক কিছু টাকা পরিশোধ করেন।
বিটিসিএল বরিশাল অফিস বলছে,বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ১১ হাজার ৯৬১ সংযোগের বিপরীতে মোট বকেয়া ২ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯৩ টাকা। যার মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ টাকা বকেয়া। যা মোট বকেয়ার প্রায় ৬৭ শতাংশ।
এরমধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বরিশাল জেলায় ৪৬৯৪টি সংযোগের বিপরীতে ৯০ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৮ টাকা, ভোলায় ১৫০৩টি সংযোগের বিপরীতে ৩৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৪ টাকা, বরগুনায় ১৪৪৭টি সংযোগের বিপরীতে ১৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৪ টাকা, পটুয়াখালীতে ১৮১০টি সংযোগের বিপরীতে ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ১৬২ টাকা, পিরোজপুরে ১৮৫টি সংযোগের বিপরীতে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৪ টাকা, ঝালকাঠিতে ১৪২২টি সংযোগের বিপরীতে ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৪৫১ টাকা বকেয়া পরে আছে।
বকেয়া বিলের বিপরীতে মোট ৪২০টি মামলা বর্তমানে চলছে। এছাড়া ৩৮টি মামলার বিপরীতে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪০২টাকা আদায় হয়েছে। মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ৮/১০ বছর আগের পুরানো মামলা বেশি। মূলত পুরানো মামলাগুলো প্রতিবছরই নতুন করে দাখিল করা হয়। এরমধ্যে কয়েক যুগ আগেরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এসব বিষয়ে বিটিসিএল এর মহাব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম খান বলেন,গ্রাহকের কাছে বর্তমানে যে বকেয়া রয়েছে তা অনেক পুরানো। বকেয়া আদায়ে গুরুত্ব দিয়ে বিল পরিশোধের জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে। মামলা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার বকেয়া আদায়ে ১০০ দিনের যে টার্গেট দিয়েছিল তাতে আমরা আশানুরূপ সারা পেয়েছি। তবে বিল পরিশোধ আগ্রহ না থাকলে জরিমানার বিধান রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।