জাতীয় সংসদে আলোচনার জন্য উত্থাপন করা হয় ‘বাণিজ্য সংগঠন বিল-২০২২’। বিলটি পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন সংসদ সদস্যরা। মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বিলটি সংসদে পাসের জন্য তোলেন। পরে ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন’ কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলে বলা হয়েছে, বাণিজ্য সংগঠনকে সরকারের কাছ থেকে সনদ ও নিবন্ধন নিতে হবে। বাণিজ্য সংগঠন ছাড়া কোনো সংগঠন বা কোম্পানি ফেডারেশন, চেম্বার, কাউন্সিল, গ্রুপ, এলায়েন্স শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না।
‘কোনো বাণিজ্য সংগঠন অথবা ফেডারেশনের আবেদন বা অভিযোগের প্রেক্ষিতে অথবা সরকারের স্বীয় বিবেচনায় কোনো নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন বা তার কোনো শাখা বা দপ্তরের কার্যক্রম, ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য বো সেবাখাতের স্বার্থে সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না মর্মে সরকারের কাছে প্রতীয়মান হয়, এই ক্ষেত্রে সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাহী কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করতে পারবে। বাতিল করার পর এক বছরের জন্য সরকার একজন প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।’
এছাড়াও প্রতিটি জেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা চেম্বার গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে নতুন এ আইনে। এ ছাড়া বাণিজ্য সংগঠনে নারী উদ্যোক্তদের লাইসেন্সের মাধ্যমে সদস্য হওয়ার আইনি ভিত্তির বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো দেশ বা অঞ্চলে ব্যবসা শিল্প বা বাণিজ্য ও সেবা খাতে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যৌথ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং একাধিক যৌথ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয়ে গঠিত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি জোটের বিধান রাখা হয়েছে বিলে।
বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে বিদেশি ব্যবসায়ীরা একটি যৌথ চেম্বার করতে পারবেন।
এদিকে শুধুমাত্র রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলসহ ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়েনি দেশের বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজার উর্ধ্বমুখী থাকায় দেশের বাজারেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যেদের দাবি, এই বিলের মাধ্যমে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের স্বার্থ রক্ষা করা হবে। ভোক্তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তারা অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীরা জনপ্রতিনিধি হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
বিলের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আইনটি খুবই জরুরি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে। তাই বিলটি আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোর মতামত নিয়েই বিলটি তৈরি করা হয়েছে। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ৫৬ বছর রাজনীতি করার পর এখনও ব্যবসায়ী দুর্নাম ঘুচেনি তার।