আমদানির ওপরে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়মূল্য। চলতি মাসেই মার্কিন ডলারের দাম ছুঁয়েছে ৯২ টাকার ঘরে। এছাড়াও বাড়ছে পাউন্ড, ইয়েন ও অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দাম।
গত মাসেই ইউরো, পাউন্ড, অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিনিময় মূল্য ৩ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করেছে। বিভিন্ন মুদ্রার ক্রয় ও বিক্রির মূল্যসংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে আমদানি-রফতানি ব্যয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ হয়ে থাকে মার্কিন ডলারে। এর বাইরে চীন থেকে আমদানিতে চীনা মুদ্রা ইউয়ান, ইউরোপ থেকে আমদানিতে ইউরো, যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিতে পাউন্ড ব্যবহার হয়ে থাকে। ডলারের দামের সঙ্গে মিলিয়ে এসব মুদ্রার দামও সমন্বয় করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে ডলারের দাম বেড়েছে মাত্র ২০ পয়সা। ব্যাংকখাতে ডলারের দাম ৮৬ থেকে বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা হয়। আর এ সময়ে খোলাবাজারে ডলারের দাম উঠেছে ৯২ টাকা পর্যন্ত। আর ব্যাংক খাতে ১ মার্চ প্রতি ইউরোর দাম ছিল ৯৬ টাকা ৪৮ পয়সা। ৬ মার্চ তা কমে দাঁড়ায় ৯৩ টাকা ৯৬ পয়সায়। আবার ৩১ মার্চ এসে ইউরোর দাম আবারও ৯৬ টাকা ১৬ পয়সায় উঠে যায়। আর গতকাল প্রতি ইউরোর বিনিময় মূল্য ছিল ৯৩ টাকা ৭৫ পয়সা।
একইভাবে ১ মার্চ প্রতি পাউন্ডের দাম ছিল ১১৫ টাকা ৪০ পয়সা। ১৫ মার্চ তা কমে দাঁড়ায় ১১১ টাকা ৮০ পয়সায়। ৩১ মার্চ পাউন্ডের দাম আবারও বেড়ে ১১৩ টাকা ১৮ পয়সায় ওঠে। আর গতকাল ব্যাংকে প্রতি পাউন্ডের বিনিময় মূল্য ছিল ১১২ টাকা ৩২ পয়সা।
এ ছাড়া গত ১ মার্চ প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৬২ টাকা ৪৫ পয়সা। ১৫ মার্চ তা কমে দাঁড়ায় ৬১ টাকা ৮০ পয়সা। আর ৩১ মার্চ এই ডলারের দাম বেড়ে হয় ৬৪ টাকা ৭২ পয়সা। গতকাল ব্যাংকে প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৬৪ টাকা ২৬ পয়সা। একইভাবে চীনের ইউয়ান, ভারতীয় রুপি, সৌদি রিয়ালসহ অন্য মুদ্রার দামও এ সময়ে বেশ কয়েক দফা ওঠানামা করেছে।
এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রিজার্ভ মুদ্রা চীনের ইউয়ান। মার্কিন ডলার, ইউরো অঞ্চলের একক মুদ্রা ইউরো, জাপানি ইয়েন ও ব্রিটিশ পাউন্ডের পর ইউয়ান হলো আইএমএফের পঞ্চম রিজার্ভ মুদ্রা। ডলার, ইউরো, পাউন্ড ও ইয়েনের পাশাপাশি ইউয়ানও আইএমএফের সম্পূরক আন্তর্জাতিক রিজার্ভ বা মজুদ সম্পদ, যা এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) নামে পরিচিত।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে এসডিআর চালু হয়। প্রতি পাঁচ বছর পরপর আইএমএফ বিশ্বের কয়েকটি প্রধান মুদ্রার বিনিময় হারের ভিত্তিতে এসডিআর মুদ্রাগুলোর মূল্যমান নির্ধারণ করে থাকে।