সংগ্রাম আর রক্তপাত ছাড়া কোন দাবি আদায় হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সরকার পতনে এবং নিজেদের অধিকার আদায়ে রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১ মে) সকাল ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত মহান মে এবং আন্তজার্তিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক শোভাযাত্রা উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা জানান।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীনরা শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য, বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ কোন কল্যাণ করেনি। রানা প্লাজা থেকে শুরু করে কোন দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পায়নি। শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরি এখনো নিশ্চিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা শ্রমিক শ্রেণিসহ সব মানুষের অধিকারগুলো হরণ করেছে। অথচ এই শ্রমিক শ্রেণীর শ্রমের ভিত্তিতেই বিশ্বের সবকিছু গড়ে উঠেছে।
সংগ্রাম-রক্তপাত ছাড়া কোনো দাবি আদায় হয় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আজকে শ্রমিক ভাইরা কি কষ্টে দিন যাপন করছেন সেটা আমার চেয়ে আপনারা ভালো জানেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার শ্রমিকদেরকে ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেল-লবণ দিতে পারে না। তারা বড় লোকদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করে, কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনো হাসপাতাল হয় না। শ্রমিকরা চিকিৎসা পায় না।
সব জায়গায় শ্রমিকেরা আজকে অবহেলিত উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই শ্রমিক শ্রেণীর শ্রমের ভিত্তিতেই বিশ্বের সবকিছু গড়ে উঠেছে। আজকে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট হয়, কিন্তু শ্রমিক ভাইদের জন্য কিছু হয় না। রানা প্লাজার শ্রমিকেরা এখনও তাদের ক্ষতিপূরণ পায়নি।
এই সরকার জনগণের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। মানুষের সব অধিকারগুলো আজকে হরণ করে নিয়েছে। তারা সম্পূর্ণভাবে পর নির্ভরশীল।
তিনি আরও বলেন, একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটি উঠাবার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধর্না দিয়েছে কিন্তু পারেনি। এখন তারা বলছে তারা নাকি ভারতের মাধ্যমে সেটা করবে। এটা এই জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার একটা বিষয়।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
পরে একটি শোভাযাত্রা নয়াপল্টন থেকে নাইটিংগেল মোড়, বিজয়নগর, পুরানা পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাসহ শ্রমিক দলের শতাধিক নেতাকর্মী।