বরিশালঃ-কোরবানির ঈদের দিনে রাজধানীর মতো বরিশালেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুস্থ, গরিব, ভ্রাম্যমাণ মানুষেরা মাংস সংগ্রহ করেছেন। তাদের কেউ কেউ সন্তানসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে সংগ্রহ করা মাংস রান্না করে খেয়ে কোরবানির ঈত উদযাপন করছেন।
আবার কেউ কেউ সেগুলোকে বিক্রিও করছেন। যে বাজারের ক্রেতারাও বেশিরভাগ নিম্নআয়ের। এক কথায় কোরবানি দিতে না পারা সেই মানুষগুলোর সংগ্রহ করা মাংসে কোন না কোনোভাবে আরও অনেকের মুখেই হাসি ফুটছে।
তবে এবারে এ বাজারে মাংসের দর অনেকটাই চড়া। বরিশাল নগরের পোর্টরোড ব্রিজের ঢালে আজ কোরবানির দিন বিকেলে বসেছে সংগ্রহকৃত মাংসের বাজার।
যে বাজার ঘুরে হতাশ হওয়া ক্রেতা মনির হোসেন বলেন, দিনমজুরের কাজ হরি, হেইয়ার লইগ্যা যদি হিসাব করেন তাই এই বাজারে কোরবানি দেওয়ার ভাগ্য মোর নাই।
তয় বউ-পোলাপানরে নিয়া আইজ কোরবানির দিন রাইতে একটু গরুর মাংস খাইতে চাইছেলাম। কিন্তু মোগো গরিবের এই বাজারেও এহন আগুন লাগছে। এহানে গরুর মাংসের কেজি চাইতাছে সাড়ে ৭শত টাহা।
তিনি বলেন, এতো টাহা থাকলে তো বাজারে গিয়া কসাইর ধারে গোনে মাংস কিইনা আনতাম। এদিকে কোরবানির একদিন নগরের বাংলাবাজার থেকে এককেজি মাংস কিনেছেন আবু বকর। তিনি জানান, মাংসের কেজি ৮০০ টাকা হলেও পরিচিত হওয়ায় আমার কেনা মাংসের দাম রেখেছেন সাড়ে ৭০০ টাকা।
এই হিসাবে দুই বাজারদরই এক জানিয়ে আরেক নারী শ্রমিক মুন্নী বলেন, গতবার বাজারের থেকে কত কোম দামে এহ্যান থাইকা মাংস কিনছি কিন্তু এইবার অ্যা কি দাম চায়। গরুর মাংসের কেজি সাড়ে ৭০০, আর পেডির (ভুড়ি) দাম চায় ৩০০ টাহা।
তবে দাম এতও চড়ার বিষয়ে মাংস বিক্রেতারা বলছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়া একজনেও তো বেশি মাংস সংগ্রহ করতে পারে না। তাই তাদের কয়েকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা মাংস কিনে এখানে তারা বিক্রি করতে বসছেন। আর যারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মাংস সংগ্রহ করেন, তাদের কাছ থেকে এখন চড়া দামেই কিনতে হয় এসব ব্যবসায়ীদের।
আর কেনা দামের পর লাভ না থাকলে বিক্রি করতে বসে লাভ কী জানিয়ে বিক্রেতা মুনসুর বলেন, এবারে সংগ্রহ করা মাংসের মান খুবই ভালো। তার মানে মানুষ এখন কোরবানি দিয়া ভালো মাংস গরিবদের দিচ্ছে।
তবে ক্রেতাদের মতে মাংসের মান ভালো হওয়ায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছেন পোর্টরোডের মৌসুমি এসব মাংস ব্যবসায়ীরা।