বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। ছবি: রয়টার্স
খ্যাতিমান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচির এক বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাস মহামারী ‘কোথাও অবসানের পথে নয়’।
বুধবার বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আধিপত্য বিস্তার করা নতুন ধরন ওমিক্রনে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয় এবং ঝুঁকির মাত্রা কম থাকার ধারণা সম্পর্কেও হুঁশিয়ার করেন ডব্লিওএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।
জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে সতর্ক অবস্থান ব্যক্ত করে তিনি জানান, গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে ১৮ কোটি মানুষ ওমিক্রনে সংক্রমিত হয়েছেন।
এর আগে ওমিক্রনের মধ্য দিয়ে প্রাণঘাতী মহামারী পর্বটি ‘এনডেমিক’ বা সাধারণ রোগের স্তরে পৌঁছাতে পারে বলে আশার কথা শুনিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি।
“তবে সেটা তখনই ঘটবে, যদি আমাদের সামনে এমন একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট হাজির না হয়, যেটা আগের ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে শরীরে তৈরি হওয়া প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে,” সতর্ক করে বলেছিলেন ফাউচি।
মহামারী শুরুর দুই বছর পর গত নভেম্বরের শেষ থেকে পুরো বিশ্বে দ্রুত ছড়াতে থাকা ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক হলেও আগের ধরনগুলোর মতো গুরুতর অসুস্থতার কারণ হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা।
ভাইরাসের নতুন এ ধরনটি ‘গড়পড়তা’ কম গুরুতর প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গেব্রিয়েসুস বলেন, “এটা মৃদু অসুস্থতা তৈরি করে এমন বর্ণনা বিভ্রান্তিকর।”
তিনি বলেন, “কোনো ভুল করবেন না, ওমিক্রনের কারণে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এমনকি মৃদু রোগ উপসর্গের কারণেও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো উপচে পড়ছে।”
বিশ্ব নেতাদের হুঁশিয়ার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, “বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনের অস্বাভাবিক বিস্তারের কারণে নতুন ধরন আসতে পারে, যে কারণে এটা অনুধাবন এবং পর্যালোচনা করা এখনও জটিলই রয়ে গেল।
“যে সব দেশে টিকা দেওয়ার হার কম, এমন অনেক দেশ সম্পর্কে আমি বিশেষভাবে শঙ্কিত। কারণ লোকজন যদি টিকা না পেয়ে থাকে, তবে তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়া এবং মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক গুণ বেশি।”
ইউরোপের বেশ কিছু দেশে নতুন করে সংক্রমণের রেকর্ডের মধ্যে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন সতর্কতা এলো। ফ্রান্সে গত মঙ্গলবার এক দিনে পাঁচ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।
এছাড়া মহামারী শুরুর পর থেকে জার্মানিতে প্রথমবারের মতো বুধবার এর আগের ২৪ ঘণ্টায় এক লাখেরও বেশি মানুষের দেহে নতুন করে করোনাভাইসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।