অনুমতি না নিয়ে সংবাদ প্রচার করা আইপিটিভি ও ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। দেড় থেকে দুমাসের মধ্যে চালু করতে বলা হয়েছে টিআরপি ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার দুপুরে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যটকোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা জানান তিনি।
অনুমতি না থাকলেও কিছু আইপিটিভি, অনিবন্ধিত অনলাইন ও ইউটিউব চ্যানেল বিজ্ঞাপন নিয়ে সংবাদ প্রচার করছে, এতে উদ্বিগ্ন টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো।
এসময় তথ্যমন্ত্রী এটকোর দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো আইপিটিভি সংবাদ প্রচার করতে পারে না। এছাড়া, ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে এগুলো সম্প্রচার নীতিমালার পরিপন্থি। আপনাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। একইসাথে যে সমস্ত সংবাদপত্র ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সংবাদ প্রচার করছে তাদের সেটার কোনো অনুমতি নেই। অনুমোদনহীন কিছু করা বেআইনী। আমরা সে ব্যাপারেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, আমরা চাহিদার প্রেক্ষিতে পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোকে অনুমোদন দিয়েছি। সেটিতে শর্ত ছিলো, প্রিন্ট আকারে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়, সেটাই শুধু অনলাইনে যাবে। সেখানে ইউটিউব চ্যানেল জুড়ে দিয়ে সংবাদ প্রচার কিংবা টকশো করার কথা নয়। এগুলোর যেহেতু অনুমোদন নেই, আপনাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহে বিশ্বাস করে এবং সে কারণেই তার হাত ধরে দেশে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের যাত্রা শুরু এবং আজ ৪৫টি টিভি লাইসেন্স পেয়েছে, দৈনিক পত্রিকা সাড়ে চারশ থেকে ১৩ বছরে বেড়ে হয়েছে সাড়ে বারোশ, অনলাইন নিউজপোর্টাল কত হাজার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।
বৈঠকে, টিভি চ্যানেলগুলোকে পে চ্যানেল করে দেয়া, টিআরপি নির্ধারনের নতুন পদ্ধতি চালুসহ কিছু দাবিদাওয়াও তুলে ধরেন টেলিভিশন মালিকরা।
অনুমতি ছাড়া সংবাদ প্রচার করা আইপিটিভি, কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা ও ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে সাড়ে আট থেকে নয় কোটির কাছাকাছি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচারের একটি বড় ক্ষেত্র এবং অপপ্রচার, গুজব রটানোরও একটি বড় ক্ষেত্র। আমরা গত ৭-৮ বছরের পরিসংখ্যানে দেখতে পাই, আমাদের দেশে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে যে সমস্ত গুজব রটানো হয়েছে, অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, স্থানীয়ভাবে বিশৃঙ্খলা থেকে সারাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা হয়েছে, প্রায় সবগুলোই এই মাধ্যমে করা হয়েছে। ডিসিদের কাছে আমরা সে বিষয় তুলে ধরেছি, তারা যেন এ ব্যাপারে সবসময় তৎপর থাকেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ডেপুটি কমিশনারবৃন্দ গতবছরের পয়লা অক্টোবর থেকে বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার ক্লিনফিড বাস্তবায়নে যেভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। এখনও এ ব্যাপারে তাদেরকে নজর রাখতে বলেছি। কেবল নেটওয়ার্ক যারা পরিচালনা করে তারা যাতে কোনক্রমেই স্থানীয়ভাবে টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে কোনো অনুষ্ঠান কিংবা বিজ্ঞাপন প্রচার না করে সেটি এবং পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রেও আইনের বিধিবিধান অনুসরণ নিশ্চিত করতে বলেছি।
এছাড়া বিশ্বের কোথাও সরকার পে-চ্যানেল ঠিক করে দেয় না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তা করার জন্য ক্যাবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজ করার কাজ চলছে।