অগ্রণী ব্যাংকের খুলনা ফুলতলা শাখার গ্রাহক রতন দাসের একাউন্ট থেকে ৯০ হাজার টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। এ পান চাষীর অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে সহযোগিতা না করে নাজেহাল করছে এমন অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকের ধারণা ব্যাংকের কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে।
অগ্রণী ব্যাংক ফুলতলা শাখার দায়িত্বশীল সূত্র জানান, রতন দাসের বাড়ি ফুলতলা সংলগ্ন অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া গ্রামে। ব্যাংকে তিনি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন দু’যুগ আগে। তার হিসাব নম্বর ০২০০০০৪১০২২৭৭। তিনি খুব কম লেনদেন করেন।
গত ১৭ জুলাই ব্যাংক ম্যানেজার বরাবর লিখিত অভিযোগে রতন দাস উল্লেখ করেন, গত ৬ জুন তার একাউন্ট থেকে তিনি ১৪ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এ সময় তিনি একাউন্টের স্থিতি দেখে হতবাক হন। হিসাব মতে থাকার কথা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকের স্টেটমেন্ট তুলে দেখেন গত ৯ মে অগ্রণী ব্যাংকের নিউমার্কেট শাখা থেকে অনলাইনে ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। নিশিকান্ত নামে এক ব্যক্তি ওই টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। তার বাড়ি যশোর জেলার কেশবপুরে। এ টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত বিষয়টি তাকে ফোনে সরাসরি বা মেসেজে জানানো হয়নি; কিন্তু তিনি যে ১৪ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে তার মেসেজ তিনি পেয়েছেন।
পানচাষী রতন দাস ও তার স্ত্রী জানান, তারা লেখাপড়া জানেন না। ব্যাংকের লোক দিয়ে চেক লেখান। এ সময় কৌশলে চেক বই থেকে একটি পাতা কেউ ছিড়ে নেয়। যা দিয়ে নব্বই হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। নিশিকান্তকে তিনি চেনেন না। দীর্ঘদিন লেনদেন না করার কারণে তার একাউন্টটি বন্ধ ছিল। ১৪ হাজার টাকা উত্তোলনের সময় আইডি কার্ড দিয়ে একাউন্টটি সচল করা হয়। তাদের প্রশ্ন- তাহলে বন্ধ একাউন্ট থেকে কিভাবে টাকা খোয়া গেলো?
রতন দাস ও তার স্ত্রী টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ফুলতলা শাখায় গেলে ম্যানেজার বলেন, আমাদের কিছু করণীয় নাই। আপনারা নিউমার্কেট শাখায় যোগাযোগ করেন। সেখানে গেলে তাদেরকে নানাভাবে নাজেহাল করা হয়। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত চান।
অগ্রণী ব্যাংক নিউমার্কেট শাখার এজিএম তপতী রানী বলেন, সব সময় গ্রাহককে বাহক চেকের টাকা তোলার ব্যাপারে ফোন করা সম্ভব হয় না। ৯০ হাজার টাকা বড় অংকের টাকা নয় বলেও জানান তিনি। রতন দাসের চেকের পাতাটি তো আমরা তার কাছ থেকে নিয়ে আসিনি। তিনি দাবি করেন রতন দাসের চেক বইয়ের পাতা দিয়ে এবং তার সই দিয়েই টাকা তোলা হয়েছে।
ফুলতলা শাখার ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, রতন দাসের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে ফুলতলা শাখার বেশিরভাগ গ্রাহক চেকের পাতা জামানত দিয়ে এনজিও’র কাছ থেকে লোন নেন। এটি সেরকম কিনা তিনি নিশ্চিত নন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে সহযোগিতার ব্যাপারে তার আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। রতন দাসের প্রশ্ন- তাহলে কি আমি আমার টাকা ফেরত পাবো না?