ছবি: সংগৃহীত
সৌরজগতে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর একমাত্র বাসস্থান পৃথিবী। প্রতিনিয়ত এই পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। এখন ২০২২-এ বসে কল্পনা করাও কঠিন ২০৫০ সালে এই পৃথিবীটা কতটা বদলে যাবে।
জনসংখ্যা
২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ৯ বিলিয়ন বা ৯০০ কোটি। পৃথিবীর ৭৫ ভাগ মানুষই বাস করবে শহরে। তখন রাস্তাগুলো হবে কয়েক তলার। এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যেতে স্কাই-ওয়াকের ব্যবস্থা করা হবে। মানুষ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জমির তীব্র সংকট তৈরি হবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি
২০৫০ সালের মধ্যেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি মানুষের হাতে এসে যাবে। ৫০ শতাংশ চাকরিও হারিয়ে যাবে।কারণ বেশিরভাগ কাজ রোবটই করবে। শারীরিক পরিশ্রম অনেকটাই কমে যাবে। জীবনযাত্রা এতটা সহজ হয়ে যাবে যা অতীতের কেউ কখনও ভাবতেও পারেনি। মানুষের সঙ্গী হবে রোবট। কাজের লোক নয় হয়তো বাসার যাবতীয় কাজ একজন রোবটই করবেন। ভাবতে অবাক লাগলেও এমনই হবে তখনকার পৃথিবী। এমনকি কেউ কেউ মানুষের সঙ্গে নয়, কৃত্রিম প্রেমিকার সঙ্গে সংসার করবে। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হার’ সিনেমাটিতে এমনটাই দেখানো হয়েছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে পরিবর্তন
চিকিৎসাক্ষেত্রে কেমন পরিবর্তন আসবে তা বিভিন্ন হলিউডের সিনেমায় এখনই দেখা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে, মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত হবে কম্পিউটার। তা হার্ড ডিস্কে সংরক্ষণ করা হবে এবং এই মস্তিষ্কের ডাটা যে কোনো সময় ফাইল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। তার মানে মানুষ কী চিন্তা করছেন, অন্যরাও জানতে পারবে।
ক্যানসারের ওষুধ আবিষ্কার হলো ২০২২ সালেই যা মাত্র ছয় মাসেই রোগীর শরীরের সমস্ত ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করতে সক্ষম। গত বছরও যে রোগের চিকিৎসা এত জটিল ছিল, এ বছর কতটা সহজ হয়ে গেল। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে পৃথিবীটা কত তাড়াতাড়ি বদলে যাচ্ছে। আর কয়েক বছরেই হয়তো এইচআইভি রোগের প্রতিষেধক ও তৈরি হয়ে যাবে।
নগরায়ণ ও শিল্পায়নের প্রভাব
নগরায়ণ ও শিল্পায়নের প্রভাবে গাছপালা বন উজাড় হচ্ছে। কিন্তু ছাদবাগানেরও বেশ জনপ্রিয়তা তৈরি হচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে শহরের অট্টালিকাগুলো হয়ে উঠবে একেকটা ছোট ছোট বন। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার থেকে কৃত্রিম প্রক্রিয়ার প্রতি ঝুঁকবে মানুষ। মাঠে নয়, পশু পাখি লালনপালন হবে ঘরের মধ্যেই বিশেষ প্রক্রিয়ায়।
ভাসমান পৃথিবী
আজকাল টিভি সেটের সামনে বসলে বন্যার খবর প্রতিদিনই শোনা যায়। আজ বাংলাদেশে তো কাল আমেরিকায়, কখনো পাকিস্তানে কিংবা ভারতে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও। ২০৫০ সালের মধ্যেই নিউইয়র্ক বা ঢাকার মতো শহরগুলো বন্যায় ডুবে যেতে পারে। বিশ্বের প্রধান শহরগুলো টিকিয়ে রাখতে ভাসমান শহর প্রযুক্তি মানুষের হাতে চলে আসবে। সমুদ্রে দেখা যাবে বিভিন্ন ভাসমান শহর।
যানবাহনের বিশাল পরিবর্তন
সময় আগামী পৃথিবীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে যানবাহনে আমূল পরিবর্তন আসবে। মিনিটেই এক শহর থেকে আরেক শহরে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে। যার কিছু কিছু ব্যবহার তো পৃথিবীতে এখনই দেখা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে জ্বালানি হিসেবে পেট্রোলের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবর্তে, হাইড্রোজেন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এমনকি জ্বালানি হিসেবে বায়ু এবং সৌরশক্তিও ব্যবহার হবে। ফ্লাইয়িং কার দেখা যাবে শহরের আকাশে। দুবাইয়ে এ ধরনের গাড়ি নিয়ে এখনই গবেষণা চলছে। সে সময় ছুটির দিনে কেউ কেউ আমেরিকা বা সিঙ্গাপুর নয় চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে ঘুরতে যাবেন।
এলিয়েনের সঙ্গে যোগাযোগ
অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর মানুষ এলিয়েনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে। এমনকি তারা কোন গ্রহে থাকেন তাও জানা যাবে।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া