ব্যাংকগুলো একদামে ডলার লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিলেও নিয়ম মানছে না তারাই। এ জন্য ব্যাংক কর্তাদের খোঁড়া অজুহাত। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় বিশৃঙ্খলা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মত তাদের।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার দাম কত হবে, তা ঠিক করার দায়িত্বও প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু চলমান ডলার সংকটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সে ক্ষমতা ব্যাংক ও ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারদের কাছে খর্ব হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে পাশ কাটিয়ে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অন্যের হাতে। অসহায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টিতে সায় দিয়ে এরই মধ্যে এক টাকা বাড়িয়ে ৯৬ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।
এ ছাড়া আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেনের বিনিময় মূল্য ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জে ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) একটি রেট দিয়ে দিয়েছে। সংগত কারণে বাফেদার রেটের সঙ্গেই একমত হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সেভাবেই ডলার বিক্রি করবে।
গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে এক রেটে ব্যাংকগুলোতে ডলার বিক্রির কথা থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, ৪ থেকে ৫ দিনের জন্য একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলার লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় করতে মূল দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংককেই পালন করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের নিয়ন্ত্রক। তবে এখন দেখা যাচ্ছে যে, সিদ্ধান্ত অন্য জায়গা থেকে আসছে। এটি কিন্তু খুবই অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়া যাবে না, যে আগের দিন একরকমের সিদ্ধান্ত দিলাম, পরের দিন আবার আরেক রকম সিদ্ধান্ত দিলাম। এতে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। এতে রফতানিকারক ও আমদানিকারকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়।
এ ছাড়া ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জ হাউস ও ফরেন এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলার কেনাবেচার ব্যবধান কমিয়ে আনতে না পারলে আগামীতে সিন্ডিকেটের আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।