সরকারকে প্রতিরোধে আরও লম্বা লাঠি নিয়ে কর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হান্নান শাহের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ’ আয়োজিত স্মরণসভায় বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা এ কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যেভাবে বিএনপির কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হয়ে ‘ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে’ দাঁড়িয়েছে তাতে বিএনপি আর নিয়মবদ্ধ রাজনৈতিক দলের মধ্যে নেই। বিএনপির বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। সবাই বিএনপির পতাকাতলে সমবেত হয়েছে। তাই আমি বলি, পতাকার যে লাঠি সে লাঠি আরও লম্বা করতে হবে। আরও লম্বা লাঠি নিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, গণমানুষ কীভাবে বিএনপির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে তা আপনারা দেখেছেন। যারা মারা যাচ্ছে কেউ ইজি বাইকের ড্রাইভার, কেউ মেকানিক! ওরা আজকে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে জীবন দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, ‘ইডেন কলেজের ঘটনাগুলো যখন পড়ি তখন মনে হয় কোন দেশে আছি! প্রধানমন্ত্রী আপনার কি টনক নড়ে না? গোটা জাতিকে অসম্মানের কোন জায়গায় নিয়ে গেছে আপনার ছাত্র সংগঠনগুলো? আপনি বড় বড় কথা বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে গিয়ে, আপনার নিজের ঘরে যে কলঙ্কজনক অধ্যায়গুলো আপনি রচিত করেছেন, সেটার দিকে কি তাকিয়ে দেখেছেন? দেখবেন না! কারণ আপনারতো জবাবদিহি করার প্রয়োজন নেই।’
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গায়ের জোরে শেখ হাসিনা মাইনোরিটি হয়ে ক্ষমতায় টিকে থেকেছেন। এটা আমরা জানি, দেশের মানুষ জানে, বিদেশের সকলে জানে। তারপরও সহজভাবে বলে দিল ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় তখনই গণতন্ত্রের সুবাতাস বইছে।’ কারা বললেন যারা ৭২ থেকে ৭৫ এ আওয়ামী লীগসহ সকল দল বাতিল করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই গায়ের জোরের সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলে, বাংলাদেশে যখনই আওয়ামী লীগ আসে সুবাতাস বয়। আসলে সকলেই জানে যখনই আওয়ামী লীগ আসে, তখনই গণতন্ত্র হত্যা হয়। যখনই আওয়ামী লীগ আসে তথনই এ দেশের অর্থনীতি লুটপাট হয়।
মোশাররফ বলেন, জনগণের সামনে একটাই আমাদের লক্ষ্য, এদেশের জনগণকে যদি আমাদের রক্ষা করতে হয়, এদেশে যদি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হয়, মানুষের অধিকার ভোটের অধিকার, অর্থনৈতিক সাম্য, বৈষম্য যদি দূর করতে হয় তাহলে এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে সম্ভব নয়। অবশ্যই এই সরকারকে হঠাতে হবে, আর হঠাতে হলে আমাদের যে দাবি এই সরকারের পদত্যাগ, এই অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে একটি নির্বাচন, যে নির্বাচনে জনগণ নিজের ভোট নিজের হাতে দিতে পারবে।
এ সময় গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও বি.জে. (অব.) হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, হান্নান শাহের ছেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।