ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমে তীরে ভয়ানক অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলের সেনারা। অভিযানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। অন্তত চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৪ জন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
খবরে বলা হয়েছে, বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে অভিযান চালায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এ অভিযানকে চলতি বছরের সবচেয়ে ভয়ানক অভিযানগুলোর একটি বলে অভিহিত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
এদিন সকাল ৯টার দিকে প্রায় ডজন খানেক সামরিক গাড়ি নিয়ে শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে ইসরাইলি সেনারা। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযানে চারজন নিহত হয়েছেন। তাদের নাম যথাক্রমে আহমাদ আলাওনেহ, আবেদ হাজেম, মোহাম্মাদ আল ওয়ান্নেহ ও মোহাম্মদ আবু নাসাহ।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, নিহত চারজনের মধ্যে তিনজন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আল আকসা মারটায়ার্স ব্রিগেডে’র সদস্য। এছাড়া আরও প্রায় ৪৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, চলতি বছরের এপ্রিলে রাজধানী তেল আবিবে একটি হামলার ঘটনা ঘটে। তারই প্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানো হয়েছে। তেল আবিবের ওই হামলায় তিনজন নিহত হয়েছিল। এছাড়া সাম্প্রতিক একাধিক বন্দুক হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের ধরতে শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে আইডিএফ সেনারা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য মতে, ২৪ বছর বয়সী যুবক আহমাদ আলাওনেহ ফিলিস্তিনের সরকারি (পিএ) গোয়েন্দা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে তিনি নিহত হয়েছেন।
আবেদ হাজেম ও আল ওয়ান্নেহ নিহত হন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। আইডিএফের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র হাজেমদের বাড়িতে আঘাত হানলে তারা নিহত হন। গত এপ্রিলে তেল আবিব হামলার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন বলে দাবি ইসরাইলি বাহিনীর।
অভিযান শুরু হওয়ার পর শরণার্থী শিবির ও এর আশপাশের এলাকায় দুপুর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা ধরে ইসরাইলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শরণার্থী শিবিরের প্রবেশপথে ইসরাইলি সেনাদের প্রতি ইট-পাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করে তরুণ ফিলিস্তিনিরা। জবাবে তাজা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে ইসরাইলি সেনারা।
এদিকে হতাহতের ঘটনায় একদিনের শোক ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিন সরকার (পিএ) ও ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দলগুলো। একই সঙ্গে জেনিন, নাবলুস, রামাল্লা ও হেবরনের মতো অধিকৃত পশ্চিম তীরের বড় শহরগুলোতে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।