কোন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো, আর কোন দেশের খারাপ, তা নিয়ে প্রতি বছর প্রতিবেদন তৈরি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গেলো বছরের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণের সমালোচনা করে বলেছে, বিশ্বজুড়ে অত্যাচারী শাসকদের সাথে হাত মিলিয়ে বরং যুক্তরাষ্ট্রই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে।
শুধু তাই নয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতিও অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে।
গেলো বছরের ঘটনা। কোন কারণ ছাড়াই পুলিশের নির্যাতনে মারা যান আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড। এই ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে উত্তাল হয় গোটা যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বর্ণবাদী আচরণ আর সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার শিকার লাখ লাখ মানুষ। সেই সঙ্গে অভিবাসী শিশুদের আটকে রাখার ঘটনাও আছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ৫৭৮ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। নারী নির্যাতনের ঘটনা বছরে এক লাখ ২৫ হাজার।
এছাড়া, দেশটিতে কুপিয়ে, গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা বছরে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার। কেবল কলম্বিয়াতেই সহিংসতার শিকার হয় বছরে প্রতি লাখে কমপক্ষে এক হাজার মানুষ।
দায়ের হওয়া হত্যা মামলার কমপক্ষে ৫৪ ভাগ আসামিই খালাস পেয়ে যায়। নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধেও ছাড়া পায় ৩০ শতাংশ আসামি।
নিজ দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি যখন অবনতির দিকে তখন বিশ্বের অন্য দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোকে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অংশ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক এম এ রশীদ মনে করেন, মানবাধিকারকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে নিজ দেশে নির্বাচনের সময় ভোটারদের কাছ থেকে রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করাই যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বড় বিষয়।