উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করেই তাপমাত্রা প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বইছে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ।
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে ঠান্ডা বাড়ায় হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
হিমালয়ের পদাদেশে থাকা কুড়িগ্রামে মাঘের মাঝামাঝি সময়ে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
যা ছিলো শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তি থাকলেও বৃহস্পতিবার বিকেলের পর শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে হিমেলে বাতাসে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কুয়াশা থাকার পর দুপুরে সূর্য দেখা গেলেও তাতে উষ্ণতা ছিল না। তার সঙ্গে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, কুড়িগ্রামে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই থেকে তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, হিমালয় পাদদেশের আরেক জেলা পঞ্চগড়ে প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে, বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। দিন রাতে বেশিরভাগ সময় কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো জেলা।
তাপমাত্রা সাত ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। কুয়াশা নেই তবে প্রচণ্ড শীত রয়েছে পঞ্চগড়ে।
সকালে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের উত্তাপ নেই। রাতভর কনকনে শীত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে গেছে।
এখন পর্যন্ত বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এতে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ আবারও বেড়ে গেছে। সূর্যের আলো ছড়ালেও আগুন পোহানো ছাড়া শীত নিবারণ করা যাচ্ছে না।
শীতের তীব্রতা বেড়েছে দিনাজপুরেও। আর জনজীবনে বেড়েছে ভোগান্তি। চলতি শীত মৌসুমে শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমার পূর্বাভাস রয়েছে।
শুক্রবার সকালে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে আট দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে দুই দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও দিনাজপুরবাসী সকালে সূর্যের দেখা পেয়েছে। তবে তাতে তেমন তাপ নেই। রয়েছে হিমেল বাতাসের প্রভাব। আর এসব মিলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নীলফামারীতেও চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীতে বেড়েছে দুর্ভোগ। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
আবহওয়া অফিস বলছে, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। এতে শীত আরও বাড়তে পারে, কমতে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা।
অন্যদিকে একদিনের ব্যবধানে সাত ডিগ্রি তাপমাত্রা কমেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। ঠান্ডা বাতাস ও শীতের তীব্রতায় চা শ্রমিক থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
দুই-তিন দিন বৃষ্টির পর জেলাটিতে হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার চা-শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন দুর্ভোগে।
বাগেরহাটে তীব্র শীতে কষ্টে আছেন কম আয়ের মানুষেরা। ঠান্ডাজনিত কারণে সর্দি-কাশি ও জ্বরে ভুগছে নবজাতক ও শিশুরা।
হাওরের জেলা নেত্রকোনাতে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সন্ধ্যার পর থেকে কমতে থাকে তাপমাত্রা। শীতের দাপটে বিপর্যস্ত জনজীবন।