গত বছরের আগস্টে কাবুল দখলের পর থেকে নানা সমস্যার মুখোমুখি সশস্ত্রগোষ্ঠী তালেবান। অর্থনৈতিক সংকট, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি না পাওয়াসহ নানা কারণে দেশ শাসন নিয়ে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আবদুল গনি বারাদাররা। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলিসহ ঘটে যাওয়া আরও কিছু ঘটনা নতুন করে তালেবান সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ঘটনার পর ডুরান্ড লাইন নিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সামনে আসতে শুরু করেছে, যেটি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।
আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠনের পর পাকিস্তান আশায় বুক বেঁধেছিল যে, এবার হয়তো দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ এই আন্তর্জাতিক সীমান্ত ডুরান্ড লাইন নিয়ে চলমান অস্থিরতা কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে। সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সতর্কতা সত্ত্বেও পাকিস্তানি নেতৃত্ব আফগান তালেবানদের সমর্থন করেছিল। এ প্রসঙ্গে ভার্চুয়াল থিংক ট্যাঙ্ক গ্লোবাল স্ট্রেট ভিউ (জিএসভি) এর একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, তালেবান কাবুল দখলের কয়েক মাস পরেই পাকিস্তান তার ফল ভোগ করছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালেবান এখন আফগানিস্তানে তাদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ডুরান্ড লাইন সীমান্তের বেড়ার যে অংশটুকু তালেবান ভেঙে ফেলেছিল, পাকিস্তানি বাহিনী তার আবার নির্মাণ করায় এই সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিনের যেসব ইস্যু চাপা পড়েছিল সেগুলোর পুনরুত্থান হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে বিরোধের যে ঘটনা, সেটির জেরে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কেচ্ছেদও ঘটতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
সম্প্রতি কাবুলে পাকিস্তান বিরোধী বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) মইদ ইউসুফ তার আফগানিস্তান সফর বাতিল করেছেন। ইউসুফের নেতৃত্বে পাকিস্তানের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল, দুই দেশের মধ্যে ডুরান্ড লাইন সীমান্তে বেড়া নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল সেখানে।
কিন্তু আফগানিস্তানের কাবুলে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভের মুখে দুই দিনের নির্ধারিত সফর বাতিল করতে বাধ্য হন এনএসএ উপদেষ্টা ইউসুফ।
গ্লোবাল স্ট্রেট ভিউ আরও বলছে, ইসলামবাদ এ বিষয়টি এখনো বুঝতে পারছে না যে, কাবুল দখলের ক্ষেত্রে আইএসের সহযোগিতার কথা তালেবান অনুভব করে না।
থিংক ট্যাঙ্ক আরও বলছে, তালেবানের এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আর্থিক সংকট এবং অর্থনৈতিক নানা বিষয় সামাল দেওয়া। এ ক্ষেত্রে তাদের কার্যকর কোনো সহায়তা দেওয়ার সামর্থ্য পাকিস্তানের নেই।