পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান (চিফ অব আর্মি স্টাফ) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে। পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ এই জেনারেল বর্তমানে সেনাবাহিনীর কুয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান (সিজেসিএসসি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরকারের এক ঘোষণার মধ্যদিয়ে পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদের পরিবর্তন নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে জল্পনা-কল্পনা চলছিল তার অবসান ঘটল। বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার শূন্যস্থান পূরণ করবেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুনির।
কে এই আসিম মুনির
পাক সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র অফিসারদের একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির। সেনাবাহিনীর একটি বড় শাখা ‘ট্রিপল এক্স কর্পস’র নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের নেতৃত্বও দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীতে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন আসিম মুনির। পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তাকে ‘সোর্ড অব অনার’ দেয়া হয়। দীর্ঘ ও আড়ম্বরপূর্ণ সামরিক পেশাজীবনে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স তথা আইএসআই’র মহাপরিচালকের মতো বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুনিরের ঝুলিতে রয়েছে পাকিস্তান সরকারের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ, বিশ্ব শান্তি, সাংস্কৃতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য খ্যাতি রয়েছে তার। বর্তমানে সেনাবাহিনীর কুয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে সামরিক ইউনিটগুলোতে রসদ সরবরাহের দায়িত্বে এই কর্মকর্তা পাকিস্তানে ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন অফিসার্স ট্রেইনিং স্কুল প্রোগ্রামের মধ্যদিয়ে। এরপর ১৯৮৬ সালে তাকে সেনাবাহিনীর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ২৩তম ব্যাটালিয়নে কমিশন করা হয়। ২০১৭ সালে তাকে মিলিটারি ইনটেলিজেন্সের মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়।
মুনিরকে ২০১৮ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। একই বছর তাকে ইন্টার-সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্সের মহাপরিচালক করা হয়। একই বছর পাক সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’-এ ভূষিত হন তিনি।
এরপর মুনিরকে গুজরানওয়ালা কর্পসের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। দুই বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর কুয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাদের একজন হিসেবে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার অগ্রগণ্য ভূমিকা রয়েছে। পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়নেও তার প্রভাব স্পষ্ট।