অশ্বিনের ব্যাটে বাংলাদেশের হতাশা বাড়ছে
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা পুরোপুরি যে বাংলাদেশের ছিল তা বলা যায় না। ব্যাটিংস্বর্গ বলে পরিচিত জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে আশ্চর্যজনকভাবে প্রথমদিনেই বেশ টার্ন পেয়েছেন স্পিনাররা।
দ্বিতীয় দিনও শুরুতেই এবাদতের বলে সাজঘরে ফিরে যান শ্রেয়াস আইয়ার। তবে লাঞ্চের আগের বাকি সময়টা বাংলাদেশকে হতাশা উপহার দিয়েছেন ভারতের দুই ব্যাটার।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৭৮ রান নিয়ে শেষ করে ভারত। দ্বিতীয় দিনে বাকি চার উইকেট শিকার করে দ্রুত অলআউট করার লক্ষ্য নিয়ে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরু করে পেস আক্রমণ দিয়ে। এবাদত হোসেন ও খালিদ আহমেদ বেশ চাপেই ফেলে দুই অপরাজিত ব্যাটার শ্রেয়াস আইয়ার ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে।
এদিন বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন এবাদত হোসেন। ভারতের স্কোর যখন ২৯৩ রান তখন তিনি ফেরান সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকা শ্রেয়াস আইয়ারকে। ৮৬ রানে ফেরেন ২৮ বছর বয়সী ডানহাতি এ ব্যাটার। আগের দিনের রানের সঙ্গে এদিন মাত্র ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি।
আইয়ারের বিদায়ের পর অবশ্য দলের বিপদ হতে দেননি অশ্বিন। কুলদীপ যাদবকে নিয়ে সেশনের বাকি সময়টায় দারুণ ব্যাটিং করে হতাশা বাড়িয়েছেন বাংলাদেশের। ৪০ রানে ব্যাট করছেন অশ্বিন। যাদব অপরাজিত ২১ রানে।
এর আগে বুধবার সাবধানে শুরু করা ভারত প্রথম উইকেট হারায় ৪১ রানের মাথায়। ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাইজুলকে সুইপ শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন শুভমান গিল। সহজ ক্যাচ লুফে নিয়ে বাংলাদেশকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন ইয়াসির আলী রাব্বি। ৪০ বলে ২০ রান করেন গিল।
পেসার এবাদত হোসেন পতন ঘটান ভারতের দ্বিতীয় উইকেটের। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজড্ হয়ে বোল্ড হন ২২ রান করা ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ১৪তম ওভারে শুভমান গিলকে ফেরানো তাইজুল দ্বিতীয় উইকেট পান ২০তম ওভার করতে এসে। তাও যেই সেই উইকেট নয়, ভারতের ব্যাটিং মেরুদণ্ড বিরাট কোহলির উইকেট শিকার করলেন তার ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত করে। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে মাত্র ১ রানে বিদায় নিয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।
পূজারার সঙ্গে এরপর ৬৪ রানের জুটি গড়েন রিশভ পন্ত। মেহেদী মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে ওয়ানডে মেজাজে ৪৬ রান করেন ভারতের উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৪৫ বলে তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়ের মার। ভারত ৪ উইকেট ঘুরে দাঁড়ায় চেতেশ্বর পূজারা ও শ্রেয়াস আইয়ারের জুটিতে। দুজনে মিলে গড়েন ১৪৯ রানের জুটি।
পূজারা-আইয়ারের ১৫০ রানের জুটিতে শুধু তাদের অবদানই না, ভুল আছে বাংলাদেশেরও। ব্যক্তিগত ৩০ রানের উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন আইয়ার। সেই ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান। লাঞ্চ বিরতির আগে প্যাভিলিয়নে ফিরতে পারতেন পূজারাও। কিন্তু এবাদতের বলে ব্যক্তিগত ২২ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ মিস হয়, এবারও ব্যর্থ সোহান। আইয়ার ব্যক্তিগত ৬৭ রানে আরেকবার ক্যাচ তুলে দেন মিডউইকেটের দিকে, এবার ক্যাচ ধরতে পারেননি এবাদত হোসেন।
পরে ১১২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পূজারা-আইয়ার মিলে গড়েন ১৪৯ রানের জুটি। এরপর পূজারাকে আউট করেন তাইজুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ৯০ রানে সরাসরি বোল্ড হন ভারত ব্যাটার। ২০৩ বলে তার ইনিংসটিতে আছে ১১টি চারের মার। এরপর ক্রিজে আসেন অক্ষর প্যাটেল। আইয়ারকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিলেও দিনের শেষ বলে অক্ষরকে শিকারে পরিণত করেন মিরাজ। ২৬ বলে ১৪ রান করে ভারত অলরাউন্ডার।
এছাড়াও চেতেশ্বর পূজারা করেন ৯০ রান। রিশভ পান্ত করেন ৪৬ রান। বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৩ উইকেট ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২ উইকেট নেন। বাকি একটি উইকেট পেসার খালেদ আহমেদের।