মোংলা বন্দর
এক সময়ের লোকসানে চলা মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানিতে গতি এসেছে। তাতে বাড়ছে রাজস্বও। এছাড়া বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়াতে ৮টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের আশা, এগুলো বাস্তবায়ন হলে বন্দর আরও গতিশীল হবে।
মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন জেটি নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এক সময়ের লোকসানি বন্দর মোংলা গত এক দশক ধরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। সবশেষ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দূরত্ব কমায় রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এ বন্দর ব্যবহার করে পণ্য রফতানির জন্য ব্যবসায়ীদের আগ্রহ অনেক বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এখানে ৩৬৬টি বিদেশি জাহাজ এসেছে। আর আমদানি ও রফতানি হয়েছে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন পণ্য। এমনকি এ অর্থবছরেই প্রথম এ বন্দর ব্যবহার করে ইউরোপে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া এ বছর ২১ হাজারেরও বেশি গাড়ি বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে।
তবে মোংলা বন্দরে নাব্য বৃদ্ধি, জেটির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি খুলনা-মোংলা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে ধারবাহিকভাবে ড্রেজিং এর চুক্তি দিতে হবে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরীফ আতিয়ার রহমান বলেন, খুলনা-মোংলা মহাসড়ককে কম করে হলেও ৬ লেনের করতে হবে। এ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা যতটা উপকৃত হচ্ছেন, পরে আরও বেশি উপকৃত হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
নাব্য বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিং, নতুন জেটি নির্মাণসহ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৮টি প্রকল্প মোংলা বন্দরে চলমান রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে এই বন্দর আরও গতিশীল হবে বলে করছে আশা করছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে এ বন্দরে ২১ হাজার গাড়ি হ্যান্ডেল করা হয়েছে। যা সক্ষমতার বাইরে। বন্দরের গতিশীলতা ও সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। তাছাড়া অসম্পূর্ণ প্রকল্পগুলো চালু হলে তা আরও বাড়বে।
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে পশুর নদীর পূর্ব তীরে ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর এই বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে মোংলা বন্দরের পাঁচটি জেটিতে ২২টি নোঙর পয়েন্টে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ ভিড়তে পারে।
শুধু দেশীয় চাহিদা নয়, ভারতে সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় এরই মধ্যে এ বন্দর ব্যবহার হয়েছে। বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেতে উম্মুখ হয়েছে আছে ভুটান এবং নেপাল। এ সব চাহিদায় এখনও ২০২৫ সালের মধ্যে সফল উপ আঞ্চলিক সমুদ্র বন্দর হয়ে উঠাই সংশ্লিষ্টদের লক্ষ্য।