শেরপুরের নালিতাবাড়িতে এক কৃষককে দেয়া ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত চাওয়ায় ওই কৃষকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। সফি উদ্দিন নামে ওই কৃষক নিজের তৈরি ফাঁসির মঞ্চে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করছেন তার স্বজনরা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে সফি উদ্দিনের বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন দুইজনকে আসামি করে নালিতাবাড়ি থানায় একটি মামলা করেছেন। সফি উদ্দিনের বাড়ি নালিতাবাড়ি উপজেলার মানিক চাঁদপাড়া গ্রামে।
নিহতের স্ত্রী আবেদা খাতুন ও মেয়ে সুমনার অভিযোগ, নালিতাবাড়ি উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের মানিক চাঁদপাড়া গ্রামের কৃষক সফি উদ্দিন জমিতে পানি দেয়ার জন্য একটি সাবমারসিবল পাম্প বসানোর উদ্দেশ্যে পল্লী বিদ্যুতের অনুমতির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু অনুমতি না পেয়ে তিনি গোপনে নিজে ৭০ হাজার টাকা খরচ করে একটি সাবমারসিবল পাম্প বসান।
পরে একই গ্রামের আহাম্মদ আলী ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তার নিজ বাড়িতে একটি সাবমারসিবল পাম্প বসানোর জন্য পল্লী বিদ্যুতের অনুমতি নিয়ে আসেন।
কিন্তু পাশাপাশি জায়গায় পাম্প বসানো যাবে না এই নিয়ম ভেঙ্গে আহাম্মদ আলী ওই গ্রামের মজিবর মেম্বারের সাথে যোগসাজশে সফি উদ্দিনের বাড়ির কাছে অন্যের জমিতে পাম্প বসানোর জন্য প্রস্তুতি নেন। একইসাথে সফি উদ্দিনকে পাম্প তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করেন তিনি।
পরে মজিবর মেম্বার তার অনুসারী কয়েকজনকে সাথে নিয়ে একটি শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সফি উদ্দিনকে তার খরচের ৭০ হাজার টাকার পরিবর্তে ২০ হাজার টাকা আহাম্মদ আলীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেন এবং তার পাম্প তুলে নিতে বলেন।
তবে এর দুইদিন পরই সফি উদ্দিনের কাছে আহাম্মদ আলী ও মজিবর মেম্বার ক্ষতিপূরণ দেয়া ২০ হাজার টাকা ফেরৎ চান এবং না দিলে তার চরম ক্ষতি হবে এমন হুমকি দেন।
এ হুমকি পাওয়ার পর সফি উদ্দিন ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই মাঠেই একটি ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তার পরিবারের।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তার মৃত্যু হলে সেজন্য মজিবর মেম্বার ও আহাম্মদ আলী দায়ী থাকবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন সফি উদ্দিন।
এ ব্যাপারে নয়াবিল ইউপি সদস্য মজিবর রহমান বাড়ীতে আছেন বলে মুঠোফোনে জানালেও সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নন বলে মুঠোফোনে দাবি করেন তিনি।
নালিতাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহাম্মেদ বাদল জানান, এ ঘটনায় দুইজনকে বিবাদী করে ৩০৬ ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।