সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরির্দশক লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়েছে। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম কারাগারে নেওয়া হয় তাদের।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কারাগার হওয়ায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে চট্টগ্রামের কারাগারে তাদের স্থানান্তর করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুপুর দেড়টার দিকে প্রদীপ ও লিয়াকতকে কক্সবাজার কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়েছে। তাদের কারাগারের কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে।’
এর আগে ৩১ জানুয়ারি বিকেলে সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া, ছয় আসামি সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনার পাঁচদিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।