নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি:একুশে বিডি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে তাদের ভাত নাই। তারা ৩০টি আসনও পাবে না। তাই তারা নিজেদের সরকারের অধীনে আবারও পাতানো নির্বাচন দিতে চায়। দেশের জনগণ এবার তা হতে দিবে না। এ পদযাত্রার মাধ্যমেই জনগণ তাদের পতন করে এক দফার বাস্তবায়ন ঘটাবে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতীদল ও জাসাস আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বিদেশিদের কি বোঝাচ্ছে জানি না। আমরা বিদেশি-টিদেশি বুঝি না। একটাই বুঝি এ সরকারকে দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই তারা জেগে উঠেছে। কৃষক-শ্রমিক জোট বেঁধে আজ রাজপথে নেমেছে। তাই এক দফা ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুক্রবারের জুমার খুতবা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। তারাই ঠিক করে দেয় মসজিদে কি খুতবা দেয়া হবে। তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। মানুষ মুখ ফুটে কথা বলতে পারে না। এ পদযাত্রার মাধ্যমেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি বলেছে তাদেরও এক দফা শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। কী আবদার, কী আবদার! দেশের মানুষকে এতো বোকা ভাববেন না। তারা সজাগ হয়েছে। তারা এবার নিজের ভোট নিজে দিতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সকলকে বোকা বানিয়ে তিনি বিচার ব্যবস্থা ও খায়রুল হকের ওপর দোষ চাপিয়ে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করলেন। কারণ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। মা তার ছেলেকে খোঁজে, শিশু তার বাবাকে খোঁজে। ছোট্ট বাচ্চা সাফা তার বাবার হাত ধরে ঈদে যেতে চায়। আমাদের অসংখ্য নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা দিয়েছে যার বেশিরভাগই গায়বী। সময় এলে এর বিচার হবে।
সমাবেশে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ মো. শাহজাহান, বরকত উল্যাহ বুলু, পদযাত্রার সমন্বয়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু, লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভুইয়া প্রমুখ।
এসময় ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, শিল্পপতি ফখরুল ইসলামসহ চট্টগ্রাম বিভাগ ও বিভিন্ন জেলার কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি ও মৎস্যজীবী দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে এক বিশাল পদযাত্রা নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম থেকে প্রধান সড়ক হয়ে বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গিয়ে শেষ হয়।