ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা ১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচনী এলাকায় রোববার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে যান চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও সকালে একটি কেন্দ্রের সামনেই দেখা গেছে বাইক, ইজিবাইক, প্রাইভেট কার ও মিনি ট্রাকের জট।
সোমবার (১৭ জুলাই) ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দেখা যায় যানজট। পুরো ভাসানটেক এলাকার রাস্তাতেই সকাল থেকে দেখা যায় বিভিন্ন যানবাহনের সারি। এতে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে ভোটারদের। লাইন দাঁড়াতেও সমস্যায় পড়ছেন তারা।
মফিজুল হোসেন নামে এক ভোটার বলেন, ‘ভেবেছিলাম সকাল সকাল এসে ভোট দিয়ে চলে যাবো। কিন্তু যানজটের কারণে কেন্দ্রে আসতে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। সেইসঙ্গে ভোগান্তি তো আছেই।’
অথচ, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাত থেকে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। আর রোববার (১৬ জুলাই) মধ্যরাত থেকে বাসসহ অন্যান্য যান্ত্রিক যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। যার তেমন প্রতিফলনই দেখা যায়নি এ রাস্তায়।
ইসির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
শনিবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্টের যেসব এলাকা ঢাকা-১৭ নির্বাচনী আসনের মধ্যে পড়েছে, সেসব এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। অন্যদিকে রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-১৭ আসনের আওতাধীন এলাকায় মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন, যেমন– বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, প্রাইভেটকার, ইজিবাইক ইত্যাদি চলাচল বন্ধ থাকবে।
ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি দৃশ্য।
রাস্তায় সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, মিনি ট্রাক, পিকআপ ভ্যান চলতে দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মোটরসাইকেল।
এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদের। তিন বলেন,
কী করবো ভাই? অফিসে তো যেতে হবে। অফিস মোহাম্মদপুর। বনানী থেকে অনেক কাহিনী করে এই রাস্তায় ঢুকেছি। এদিক দিয়ে মিরপুর হয়ে মোহাম্মদপুর যাবো।
কথা হয় বেশ কয়েকজন প্রাইভেট কার চালকের সঙ্গেও। তারা জানান, অফিস ও বিভিন্ন কাজে তারা বের হয়েছেন।
যানজট অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা এক পিকআপ ভ্যানের চালক বলেন, ‘কি করুম ভাই। কর্ম কইরা তো খাইতে হবে। তাই সুযোগ পাইয়া চালাইতেছি।’
পুলিশ আপনাদের বাধা দেয়নি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘বাধা তো দেয়ই। এই পথে পুলিশ নাই বিধায় এদিক দিয়ে যাচ্ছি।’
কথা হয় হোসেন মোল্লা নামে এক সিএনজি চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রায় সব রাস্তা বন্ধ। শুনলাম এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাচ্ছে তাই ঢুকে পড়লাম।’
ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি দৃশ্য।
এ বিষয়ে কেন্দ্রের বাহিরে কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। পরবর্তীকালে কেন্দ্রের ভেতরে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য শাহ আলমের সঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদের। তিনি বলেন,
আমরা আসলে এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নই। আমাদের দায়িত্ব কেন্দ্রের ভেতরের শৃঙ্খলা রক্ষা করা। কেন্দ্রের বাহিরে রাস্তার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের ও থানার।
যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাষানটেক থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনাকে নিবাচন কমিশন ও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কোন গাড়ি চলবে কোন গাড়ি চলবে না এটা তারা দেখে।’
এখানে তো সব ধরনের গাড়িই চলছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আসলে নির্দেশনাটা আমার জানা নেই। কোন রোডে কোন গাড়ি চলবে এ রোডম্যাপটা ট্রাফিক পুলিশ বলতে পারবে।’
ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি খোঁজ করছি। ট্রাফিক ডিসির সঙ্গে কথা বলে আপডেট জানাচ্ছি।’