ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ব্যাংক থেকে রেমিট্যান্স হাতিয়ে নেয়া চক্রের গ্রেফতার সদস্যরা। ছবি সংগৃহীত
প্রতারক চক্রের খপ্পরে এবার ব্যাংক। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সংঘবদ্ধ একটি চক্র রেমিট্যান্সের নামে হাতিয়ে নিয়েছে ব্যাংকের লাখ লাখ টাকা। সরকারি-বেসরকারিসহ পাঁচটি ব্যাংকের ১১টি শাখায় ঘটেছে এমন ঘটনা। সম্প্রতি সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
সম্প্রতি বেসরকারি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের হাসনাবাদ শাখায় ঘটেছে রেমিট্যান্সের টাকা হাতিয়ে নেয়ার এমন একটি ঘটনা। এই একটি শাখা থেকেই কয়েকজন গ্রাহক প্রায় ৬ লাখ টাকা তোলেন রেমিট্যান্সের নামে।
দিনশেষে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ হিসাব মেলাতে গিয়ে দেখেন রেমিট্যান্সের নামে যে টাকা তুলেছেন গ্রাহকরা, তার কোনোটিরই বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তারা যে তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়ে টাকা তুলেছেন, তা ছিল সম্পূর্ণ নকল। অর্থাৎ, জালজালিয়াতি করে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের বোকা বানিয়েছেন প্রতারক চক্রটির সদস্যরা, যা পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে।
এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ ভয়াবহ একটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পায়। গ্রেফতার করা হয় পাঁচজনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে রেমিট্যান্সের নামে ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্র সম্পর্কে।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, প্রথমে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকে রেকি করে চক্রের সদস্যরা। রেমিট্যান্স কর্নারে গিয়ে সেখানকার দায়িত্বে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তার কার্যকলাপ অনুসরণ করে একজন। কৌশলে রেমিট্যান্স স্লিপের ছবি তোলা অথবা কারো কাছ থেকে সংগ্রহ করে থাকে সেটি। সেখানে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তার সিল-স্বাক্ষর নকল করে হুবহু স্লিপ তারা নিজেরাই তৈরি করে মনমতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে জমা দেয়। ক্যাশে থাকা কর্মকর্তা দেখেন সবই ঠিক আছে। দিয়ে দেন টাকা। অথচ তাদের নামে কেউ রেমিট্যান্সই পাঠাননি। এভাবে তারা রেমিট্যান্সের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে আসছিল।
ঢাকা পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘সবকিছু নকল করে তারা ব্যাংকটির রেমিট্যান্স শাখা থেকে স্লিপটি নিয়ে তা পূরণ করে ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিয়ে টাকা সংগ্রহ করে। আসল গ্রাহকরা এখানে প্রতারিত হয়নি, মূলত ব্যাংকটি প্রতারণার শিকার হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ থাকবে আমার পক্ষ থেকে।’
আর কোন কোন ব্যাংকে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেই তথ্য পুলিশ সংগ্রহ করছে বলেও জানান তিনি।