লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পথযাত্রায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে সজিব নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নিহত সজিব চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাসেরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে শহরের গোডাউন রোড থেকে পথযাত্রা বের করেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পথযাত্রাটি জেলা শহরের সামাদ মোড় সংলগ্ন কলেজ রোড এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় সজিব নামে ওই যুবক গুরুতর আহত হন। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে বিএনপি।
পরে বিএনপির পথযাত্রাটি শহরের রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের আধুনিক হাসপাতাল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাকা-রায়পুর হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ আবারও বাধা দেয়। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটা নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড সটগানের গুলি ছোড়ে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. সোহেল রানা, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোসলেহ উদ্দিন, শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম, একজন সাংবাদিক ও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা-কনস্টেবলসহ জেলা পুলিশের ৩০ সদস্য আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমাহল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা আধুনিক হাসপাতাল, সেতুবন্ধন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করে। পরে বিক্ষুব্ধরা সড়কে একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হছিবুর রহমান বলেন, ‘নিহত সজীব কৃষকদলের কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়াও পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল ও সটগানের গুলিতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ৮০ নেতাকর্মী আহত হন। গুলিবিদ্ধ অনেক নেতাকর্মীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘মহাসড়কে উঠতে বাধা দিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ৩০ জন আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারসেল, সটগানের গুলি ছোড়ে। তবে কীভাবে সজীবের মৃত্যু হয়েছে, আমরা এখনও আইডেন্টিফাই করতে পারিনি।