সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শাহজাহান মিয়ার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে উপজেলা প্রশাসন। ছবি সংগৃহীত।
দেশবরেণ্য সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শাহজাহান মিয়াকে তার জন্মস্থান মুন্সীগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।
দেশবরেণ্য সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শাহজাহান মিয়াকে তার জন্মস্থান মুন্সীগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজিরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কাজিরগাঁও সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে তার নিজ বাড়ি কাজিরগাঁওয়ে লৌহজং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইলিয়াস আহমেদের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
তার প্রথম জানাজা হয় বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে। দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি বাসার বাথরুমে পড়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার (২৬ জুলাই) রাত ১০টায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
তার জানাজায় অংশ নেন মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের লৌহজং উপজেলার সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মৃধা, অবসর প্রাপ্ত উপসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মজিবুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম, লৌহজং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বাবুল মুন্সী, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মরহুমের অনুজ লৌহজং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মো. শাহানুর ইসলাম, বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদিক হাসান, ছোট ছেলে সাফিন হাসান সজিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর আলী, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি জুলহাস ব্যাপারী প্রমুখ।
বরেণ্য সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মিয়া মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন। তার জানাজার আগে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন বড় ছেলে অধ্যাপক ড. সাদিক হাসান ও মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল।
এম শাহজাহান মিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন।
তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৯৭০ সালে অধুনাবিলুপ্ত ইংরেজি দৈনিক দি পিপলসে। এরপর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসে যোগ দেন ১৯৭৩ সালে। অবসরগ্রহণের আগে তিনি বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদকের পদে ছিলেন।
এম শাহজাহান মিয়া ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পাঁচ বার সভাপতি এবং ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে দুই দফা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
১৯৯৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটন দূতাবাসে মিনিস্টার (প্রেস) হিসেবে তিন বছর কাজ করেন এম শাহজাহান মিয়া।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শাহজাহান মিয়া স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকদের পক্ষে অন্যতম নেতৃত্বে ছিলেন।