বরখাস্ত মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক। ছবি: সংগৃহীত
বাগেরহাটের শরণখোলায় নবম শ্রেণির ছাত্রীকে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করার ঘটনায় খাদা আলহাজ গণ মেমোরিয়াল দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ১৫দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮জুলাই) দুপুরে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (২৬জুলাই) দুপুরে জোহরের নামাজের জন্য ছাত্রদের সঙ্গে ওজু করতে না যাওয়ায় মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী আবিদা সুলতানাকে (১৫) চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করেন সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক। আহত ওই ছাত্রী বর্তমানে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী আবিদা সুলতানা বলে, বুধবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত আমাদের ক্লাস চলছে। এরপর জোহরের নামাজ পড়ে আমাদের বাড়ি যেতে বলেন সুপার। আমি অসুস্থ বলার পরও সুপার আমাকে জোর করে ছাত্রদের সঙ্গে ওজু করাতে চান। আমি দোতলা থেকে নামতে দেরি হওয়ায় সুপার আমাকে পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এরপর পুকুর পাড়ে গিয়েই আমি মাথা ঘুরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই।
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস এম ফয়সাল আহমেদ বলেন, আবিদাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সে সুস্থ আছে।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা বলেন, ছাত্রীর গায়ে হাত তুলে সুপার খুবই অন্যায় করেছেন। পরিস্থিতি সামলাতে ম্যানেজিং কমিটির সভায় সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ছগির ফকিরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
তবে, মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, মাদরাসায় নামাজ বাধ্যতামূলক। তাই সকল ছাত্রছাত্রীকে জোহরের নামাজের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলে সবাই ওজু করতে যায়। কিন্তু আবিদাকে বারবার বলা সত্ত্বেও সে ওজু করতে না যাওয়ায় তাকে কয়েকটি চড় দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে যে এতদূর গড়াবে ভাবতে পারিনি। আমি এ ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে ছাত্রীর পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।