বেন স্টোকস (বাঁয়ে) ও মঈন আলী (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
টেস্ট ক্রিকেটকে আগেই বিদায় জানিয়েছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী। কিন্তু সেলফোনে একটা বার্তা তাকে বাধ্য করেছিল অবসর ভেঙে সাদা জার্সি গায়ে মাঠে নামতে। অ্যাশেজ সামনে রেখে ইংলিশ অধিনায়ক টেস্টে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন মঈনকে। সেই অ্যাশেজ শেষ হলো গতকাল। মঈনের টেস্ট ক্যারিয়ারও কি শেষ তার সঙ্গেই?
অ্যাশেজ ইতিহাসের অন্যতম জমজমাট সিরিজ শেষ হয়েছে গতকাল। ওভালে শেষদিনে ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলেছে। হাতের মুঠোয় আসা ম্যাচ ফসকে গেছে অস্ট্রেলিয়ার হাত থেকে। তাতে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া সিরিজ স্বাগতিক ইংল্যান্ড ড্র করেছে ২-২-এ।
ইংল্যান্ডের এই প্রত্যাবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে মঈনের। এই তো ওভালে শেষদিনে অস্ট্রেলিয়ার শেষ দুই উইকেট শিকার করে আলোটা অবসরের ঘোষণা দেওয়া স্টুয়ার্ট ব্রড টেনে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৩টি উইকেট নিয়ে বড় ভূমিকা তো এই স্পিনারই রেখেছেন। অথচ তার তো এই সিরিজই খেলার কথা ছিল না।
অ্যাশেজের আগে নিয়মিত স্পিনার জ্যাক লিচ ইনজুরিতে পড়ায় বন্ধু স্টোকস একটা এক শব্দের বার্তা পাঠিয়েছিলেন মঈনকে – ‘অ্যাশেজ?’ একে নিছক রসিকতাই ধরে নিয়েছিলেন ২০২১ সালেই টেস্টকে বিদায় বলে দেওয়া ইংলিশ স্পিন-অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত অনুরোধে অ্যাশেজটা গিলেও ফেলেন তিনি।
তবে এই এক সিরিজেই শেষ, আর লাল বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ড দলে ফিরছেন না মঈন। ব্রডের সঙ্গে মঈনও গতকালই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন আবার। এবার নাকি ‘চিরদিনের’ জন্যই!
কিন্তু ফের যদি কোন সিরিজের আগে স্টোকস বার্তা পাঠায়? ইংল্যান্ডের জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে মজার ছলেই উত্তরটা দিয়েছেন মঈন।
তিনি বলেন, ‘স্টোকসি যদি আমাকে ফের বার্তা (টেস্ট খেলতে) পাঠায়, সেই বার্তা আমি সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিব। (টেস্টে) আমার সময় শেষ। এটা (টেস্টে ফেরা) আমি উপভোগ করেছি। আর সেটা এভাবে হওয়াটা তো দারুণ কিছুই।’
অ্যাশেজে দুই বছর বিরতির পর টেস্ট খেলতে নেমে এজবাস্টোন টেস্টেই চোট পান মঈন। যে কারণে খেলতে পারেননি লর্ডসে। এরপরের তিন টেস্টেই অফস্পিন বোলিংয়ে দারুণ অবদান রেখেছেন ইংল্যান্ডের প্রত্যাবর্তনে। হেডিংলিতে শিকার করেছেন স্টিভ স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেনকে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে তিন নম্বরে নেমে খেলেছেন ৫৪ রানের ইনিংস। আর ওভালে দ্বিতীয় ইনিংসে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ ও প্যাট কামিন্সকে আউট করে অজিদের ইনিংসে ব্যাটিংধস নামাতে রেখেছেন অবদান।
ম্যাচ শেষে মঈন আরও বলেন, ‘‘ফিরতে পেরে ভালোই লেগেছিল। বাজ (ম্যাককালাম) ও স্টোকসির সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছি, এমন একটা দলে খেলেছি, যেখানে জিমি (অ্যান্ডারসন) ও ব্রডি ছিল। এই দুজন আমার ক্যারিয়ারের শুরুতেই ছিলেন। দারুণ অনুভূতি নিয়েই চলে যাচ্ছি। ভালো লাগছে যে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জিতে বিদায় নিতে পারলাম, আর ওই জয়ে তো আমারও একটু-আধটু অবদান আছে।’
৬৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৩০৯৪ রান করার পাশাপাশি ২০৪ উইকেট শিকার করেছেন এই অলরাউন্ডার।